ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ৯ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে এক লাইনম্যানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। 

সোমবার দুপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোয়ালমারী উপজেলা জোনাল অফিসে এ ঘটনা ঘটে। আহত লাইনম্যানের নাম পার্থ বাগচী (২৮)। তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সোমবার রাতে বাসায় ফিরে যান। পার্থ বাগচী জানান, তাকে কিল, ঘুসি ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এতে তার মাথা কেটে যায়। 

অভিযুক্ত আজিজুল হক বোয়ালমারী পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার এবং পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক।

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আজিজুল হকের ৯ মাসের ৩৬ হাজার ৮৮২ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ না করায় সোমবার দুপুরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন লাইনম্যান পার্থ বাগচী। এমন খবর পেয়ে জোনাল অফিসে গিয়ে ওই লাইনম্যানকে মারধর করেন তিনি। পরে লাইনম্যানকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন সহকর্মীরা। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজিজুল হক দাবি করেন, চলতি মাসের বিল বাড়তি আসায় মোবাইলে তিনি বিষয়টি জানতে চান। এ নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। এরপরেই তার লাইন কেটে দেওয়া হয়। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বছরে দুবার বিল দিয়ে থাকি। এটা তো তারাও জানে।’ 

মারধর করার বিষয়টি স্বীকার করে আজিজুল বলেন, ‘আমার পোলাপান গিয়ে চড়-থাপ্পড় দিয়েছিল। তখন চাবির আঘাতে ওই লোকের মাথা কেটে যায়।’

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এস এম নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘৯ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় লাইন কেটে দেওয়া হলে আমার কর্মীকে অফিসে ঢুকে মারধর করেছে। এ ঘটনায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। শুনেছি, নিজেরা মীমাংসা করেছে।’


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব দ য ৎ ব ল বক য় ল ইনম য ন আজ জ ল ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ