বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজের প্রথমটিতে পাকিস্তান ৭ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে। স্বাগতিক দলের অধিনায়ক সালমান আঘা ফিফটি পেয়েছেন। শাদাব খান ও হাসান নওয়াজ ফিফটি ছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন।

অধিনায়ক সালমান আঘা ৩৪ বলে ৫৬ রান করেন। আটটি চার ও একটি ছক্কা মারেন। মোহাম্মদ হারিস ১৮ বলে ৩১ রান যোগ করেন। হাসান নওয়াজ ২২ বলে চারটি ছক্কা ও দুই চারে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। এর আগে ওপেনার সাঈম আইয়ূব শূন্য ও ফখর জামান ১ রান করে আউট হন।  

বাংলাদেশ একাদশে আছেন তিন পেসার তানজিম সাকিব, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম। স্পিন আক্রমণে রিশাদ হোসেন ও শেখ মাহেদীকে রাখা হয়েছে। ব্যাটিংয়ে নাজমুল শান্তকে একাদশে রাখা হয়নি।

পাকিস্তান দুই পেসার হাসান আলী ও হারিস রউফের সঙ্গে পেস অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফকে একাদশে নিয়েছে। স্পিন সামলাবেন দুই লেগি শাদাব খান ও আবরার আহমেদ। ব্যাটিংয়ে হাসান নওয়াজ জায়গা পেয়েছেন। পিএসএলে দারুণ খেলেছেন তিনি। সাঈব আইয়ূব ফিরেছেন পাকিস্তানের একাদশে। 

বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন, লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, শেখ মাহেদী, জাকের আলী, শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, তানজিম সাকিব, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম।

পাকিস্তান একাদশ: ফখর জামান, সাঈম আইয়ূব, মোহাম্মদ হারিস, সালমান আঘা, হাসান নওয়াজ, শাদাব খান, খুলদীল শাহ, ফাহিম আশরাফ, হাসান আলী, হারিস রউফ, আবরার আহমেদ। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ স ন নওয় জ

এছাড়াও পড়ুন:

জিয়া হত্যাকাণ্ড ও তারপর কী ঘটেছিল

জিয়াউর রহমান ঘটনার আগের দিন তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির স্থানীয় নেতাদের বিরোধ মেটাতে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে। চট্টগ্রামে দুটি উপদলে বিভক্ত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ২৯ মে রাতে স্থানীয় সার্কিট হাউসে ঘুমিয়ে ছিলেন জিয়াউর রহমান। ভোররাতে সেখানেই তাঁকে হত্যা করা হয়।

৩০ মে ভোরে গোলাগুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীর। ডিসির বাংলো থেকে সার্কিট হাউসের দূরত্ব মাইলখানেক হবে। সকালেই তিনি বাংলো সার্কিট হাউসে গিয়ে জিয়াউর রহমানের মৃতদেহের বীভৎস দৃশ্য দেখেছিলেন। সেই থেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে ঘটনাপ্রবাহ কাছে থেকে দেখেছেন তিনি।

‘দুই জেনারেলের হত্যাকাণ্ড, ১৯৮১-র ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান’ এই শিরোনামে একটি বই লিখেছেন জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর ভোরেই একজন সহকারী প্রটোকল অফিসার মোশতাক তাঁকে ফোন করে কিছু তথ্য দেন।

ওই সহকারী প্রটোকল অফিসারের বরাত দিয়ে বইয়ে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী লিখেছেন, ‘ভোর চারটার দিকে সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি গুলি করতে করতে সার্কিট হাউসে প্রবেশ করে। সে (সহকারী প্রটোকল অফিসার) জানে না পুলিশ বা প্রেসিডেন্টের গার্ড তাদের বাধা দিতে পেরেছিল কি না। তবে তারা গুলি করতে করতে সার্কিট হাউসে ঢুকে যায়। মোশতাক লাউঞ্জে বসে ছিল। সেনারা প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সে পাশের ডাইনিং রুমের টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়ে। এরপর সে শুনতে পায় ভারী বুটের আওয়াজ। কয়েকজন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে প্রেসিডেন্টের রুমের দিকে যায়। এরপর সে আরও গুলির আওয়াজ শুনতে পায়। কয়েক মিনিট পর ওপরের লোকগুলো নিচে চলে আসে আর তার কিছুক্ষণ পর শোনে গাড়ির আওয়াজ। সে বুঝল, যারা এসেছিল, তারা চলে গেছে। সে এত ভয় পেয়েছিল যে গাড়িগুলো চলে যাওয়ার পর সে পালিয়ে এসে গ্যারেজ থেকে আমাকে ফোন করেছে।  আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, প্রেসিডেন্ট কী অবস্থায় আছেন, সে জানে কি না, উত্তরে সে জানাল, এ ব্যাপারে এখনো কিছুই জানে না সে।’

এরপর অল্প সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার সাইফুদ্দিন ফোন করে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীকে জানান যে, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া আততায়ীদের হাতে খুন হয়েছেন।’

ঘটনা সম্পর্কে এ সব তথ্য পাওয়ার পর পরই বিভাগীয় কমিশনারকে সঙ্গে নিয়ে সার্কিট হাউসে যান জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। সেখানে পৌঁছে দেখেন সার্কিট হাউস প্রায় পরিত্যক্ত একটা ভবন। চারপাশে কোনো প্রহরা ছিল না, ছিল না কোনো পুলিশ, ছিল না সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য।  সার্কিট হাউসের লনে দেখতে পান দাঁড়িয়ে আছেন তৎকালীন পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি পুলিশ ও পুলিশের গোপন শাখার সহকারী কমিশনার।

জেলা প্রশাসক হিসেবে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী সে সময় পুলিশের গোপন শাখার সহকারী কমিশনার আবদুস সাত্তারকে নিয়ে সার্কিট হাউসের ওপরতলায় যান পরিস্থিতি দেখতে। সেই পরিস্থিতিরও বর্ণনা দিয়েছেন তিনি তাঁর বইয়ে।

জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ