বেওয়ারিশ লাশের কবর শনাক্ত ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি স্বজনদের
Published: 29th, May 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা লাশগুলোর কবর শনাক্ত ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব শহীদের স্বীকৃতিসহ হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা।
বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স ও জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স–মিরপুরের আয়োজনে ‘বেওয়ারিশ লাশ দাফন করা শহীদ পরিবারের বিভিন্ন দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ১১৪টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করার কথা জানান। এ ছাড়া এই লাশগুলোর কবর শনাক্তে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কোনো আন্তরিকতা দেখছেন না বলে অভিযোগ তাঁদের। এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার ও ক্ষতিগ্রস্ত শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন এবং আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ আসাদুল্লাহর স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী ১৯ জুলাই থেকে নিখোঁজ হন। এরপর ২৩ জুলাই আমরা ছবির মাধ্যমে তাঁর খোঁজ পাই। কিন্তু তাঁর খোঁজ পাওয়ার আগে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কাছে লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে হস্তান্তর করা হয়। তাঁরা সে লাশ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে জানতে পারি, ২৩ জুলাই যে ৮টি লাশ দাফন করা হয়, তাঁর মধ্যে একজন ছিলেন আমার স্বামী।’
ফারজানা আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমার স্বামীর কবরের সঠিক সন্ধান পাইনি। এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। সারজিস আলমের সঙ্গেও দেখা করেছি, কথা বলেছি, তিনিও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে আশ্বাসের কোনো ফল আমরা দেখতে পাইনি। সরকারের কাছে দ্রুত আমার স্বামীর কবর শনাক্তের বিষয়ে কাজ করার দাবি জানাই।’
শহীদ সোহেল রানার ছোট ভাই নাবিল হোসেন জানান, তিনি ৩৪ দিন পর ভাইয়ের মৃত্যু ও রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে কবর দেওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘১০ মাস হয়ে গেল অথচ এই সরকার আমাদের ভাইদের কবর খুঁজে দিতে সহায়তা করছে না।’ এ সময় বেওয়ারিশ শহীদদের কবর শনাক্তসহ সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন নাবিল।
দাবিগুলো হলো ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রতিটি কবর শনাক্ত করতে হবে। শনাক্ত করার পর প্রতিটি কবরে নামফলক দিতে হবে। কবরস্থানকে নামকরণ করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রে গণকবরের বিষয়ে উল্লেখ রাখতে হবে। তাঁরা বলেন, ‘দাবিগুলো পূরণ না হলে আমরা ১ জুলাই থেকে মন্ত্রণালয়ের সামনে অনশন করব।’
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ইমরান মাহফুজ বলেন, ‘শহীদদের পরিচয় শনাক্তে সরকার কী করছে জানতে চেয়ে গত বছরের ১৯ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমরা এই চিঠি প্রেরণ করি। ১৫ দিন পর সে চিঠির জবাব এলেও তা সন্তোষজনক ছিল না।’ তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সরকার এ বিষয়ে ভূমিকা গ্রহণ করেনি। অথচ একটি গণ–অভ্যুত্থানের সরকারের এটি প্রথম কাজ হওয়া দরকার ছিল।
জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স–মিরপুরের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ রোমেল, শহীদ শেখ শাহরিয়ার বিন মতিনের বাবা আবদুল মতিন, শহীদ জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেনসহ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র স ব ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে মদ খেয়ে রাস্তায় মাতলামি, ৫ মাতাল আটক
মদ খেয়ে রাস্তায় মাতলামি করার সময় বন্দরে ৫ মাতালকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত মাতালরা হলো বন্দর থানার চৌধুরী বাড়ি এলাকার ইদ্রিস আলী মিয়ার ছেলে সাগর (৩০) সোনাকান্দা এনায়েতনগর এলাকার মৃত আব্দুল হাকিম মিয়ার ছেলে বাচ্চু (৫২) একই এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার ছেলে মামুন (৪০)।
সোনাকান্দা কবরস্থান রোড এলাকার মৃত মনছুর আলী ছেলে ইকবাল হোসেন (৫০) ও বাগদোবাড়ীয়া এলাকার ইমরান মিয়া মিয়ার ছেলে স্বপন (২৪) ।
পুলিশ আটককৃতদের রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করেছে। এর আগে গত শনিবার (২৬ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় বন্দর থানার নবীগঞ্জ কবরস্থান সংলগ্ন পাঁকা রাস্তার উপরে অভিযান চালিয়ে এদেরকে আটক করে।
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরা গভীর রাতে মাতাল অবস্থায় রাস্তায় হৈচৈ ও জনমনে বিরক্তি সৃষ্টি করার সময় এদেরকে আটক করা হয়।