দেশের বিস্কুটের পুরো চাহিদা পূরণ করছে স্থানীয় উৎপাদকেরা
Published: 29th, May 2025 GMT
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট কেনাবেচা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান আয় ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে দুই দশক ধরে বিস্কুটের বাজারের প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো বলে জানা যায়। বছরে প্রায় ১০-১২ শতাংশ হারে বিস্কুটের বাজার বাড়ছে। ২০২০-২১ সালে বিস্কুটের চাহিদা প্রায় ২০-২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। বিস্কুট তৈরি খাতের আকার ৮০-৯০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থানীয় বিস্কুটের চাহিদার প্রায় ৯৭-৯৮ শতাংশ পূরণ করছে। ২০২১ সালের হিসাবে জানা যায়, বছরে মাথাপিছু বিস্কুট ২ দশমিক ৮ কেজি পর্যন্ত বেড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এই হার তৃতীয় সর্বোচ্চ।
দেশব্যাপী প্রায় ১০০টি স্বয়ংক্রিয় বিস্কুট কারখানা রয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বেকারি বিস্কুট তৈরি ও বিপণনে যুক্ত। দেশে বার্ষিক প্রায় ২ লাখ টন বিস্কুট উৎপাদিত হচ্ছে। বৃহৎ স্বয়ংক্রিয় কারখানায় প্রায় ৮০ শতাংশ বিস্কুট তৈরি করা হচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় যেসব প্রতিষ্ঠান বিস্কুট তৈরি করছে, তার মধ্যে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রিদিশা ফুডস, প্রাণ ফুডস লিমিটেড, হক ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, বেঙ্গল বিস্কুট, ড্যান কেক বাংলাদেশ, ফ্রেশ বিস্কুট (এমজিআই গ্রুপ), বেকম্যান’স (আকিজ গ্রুপ) ইত্যাদি। বাজারে নানা ধরনের ও নানা স্বাদের অলিম্পিক, হক, নাবিস্কো, ড্যানিশ, রোমানিয়া, কোকোলা, প্রাণ, কিষোয়ান, ওয়েল ফুড, রিদিশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, আকিজ, ফ্রেশ, ড্যান ফুডস, ইস্পাহানি ব্র্যান্ডের বিস্কুট বাজারে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশি ভোক্তারা নানা ধরনের বিস্কুট কেনেন। ক্ল্যাসিক টি বিস্কুট থেকে শুরু করে ক্রিম স্যান্ডউইচ বিস্কুট, ওয়েফার বিস্কুট বাজারে দেখা যায়। বিস্কুটের মধ্যে অন্য সব উপকরণ হিসেবে চকলেট, নারকেল, বাদাম, চিজসহ বিভিন্ন বস্তুর ব্যবহার দেখা যায়। এ ছাড়া টোস্ট বিস্কুট বিক্রির বাজার বেশ বড় বাংলাদেশে। বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে বিস্কুটের ১০ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে। বৃহৎ শিল্পকারখানা হিসেবে বিস্কুটের ১৫টি কারখানা তথ্য জানা যায়। দেশে একসময় পাড়া-মহল্লার ছোট বেকারি থেকে বিস্কুট তৈরি হতো। ইতিহাস বলছে, ১৯৬৪ সালে ঢাকা জেলায় ১৯টি বেকারি ছিল। ব্যারিস্টার তমিজুল হক ১৯৪৭ সালে ঢাকার তেজগাঁওয়ে বিস্কুটের একটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। সেই হক বিস্কুট এখন বড় ব্র্যান্ডের একটি। নাবিস্কো স্বাধীনতার আগে থেকে বিস্কুট উৎপাদন করছে। ১৯৭০–এর দশকে দেশে মাসাফি, আজাদ, অলিম্পিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিস্কুট তৈরি করতে শুরু করে।
বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএবিবিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ছোট-বড় পাঁচ থেকে ছয় হাজার প্রতিষ্ঠান বিস্কুট উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে ১০০টির মতো প্রতিষ্ঠানের স্বয়ংক্রিয় কারখানা রয়েছে। ৫০টি মাঝারি আকৃতির, ৩৫টির মতো কারখানা বড় হিসেবে গণ্য হয়। বৃহৎ শিল্প বলতে যা বোঝায়, বিস্কুটের তেমন কারখানা রয়েছে ১৫টির মতো।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।