ফারুকের বিরুদ্ধে যেসব অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত কমিটি
Published: 29th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনটি রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচন ও ব্যবস্থাপনা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ই-টিকিটিং অ্যাপ তৈরির টেন্ডারসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে যথাযথ নিয়ম বা সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত তদন্তে বলা হয়েছে, বিসিবি সভাপতি এনলিস্টেড কোম্পানিগুলোকে সুযোগ না দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করে একক সিদ্ধান্তে যথেষ্ট সক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও একটি অনিবন্ধিত কোম্পানিকে কাজ প্রদান করেন।
আরো পড়ুন:
ফারুকের বিরুদ্ধে ৮ পরিচালকের অনাস্থা, থাকছে না পদ
পদত্যাগ করব না আমি, কোনো কারণ নেই: রাইজিংবিডিকে ফারুক
সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে, বোর্ড সভাপতি সংশ্লিষ্ট কাউন্সিল মেম্বার ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মতামতের গুরুত্ব না দিয়ে নিজের নির্বাহী ক্ষমতায় এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা ছিল। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি অন্য পরিচালকদের মতামত নিতেন না। এমনকি দল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে নীতিমালা প্রণয়ন বা সংশোধনের সময় অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। সকল সিদ্ধান্ত বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, বিপিএলে সততার বিষয়টি অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আপিল বিভাগের সাবেক বিচারক মির্জা হায়দার আলীকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন—সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম ও আন্তর্জাতিক আইনজীবী ড.
এই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুক আহমেদকে সরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। তবে ফারুক রাইজিংবিডি ডটকমকে জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। কারণ, পদত্যাগ করার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিসিবি সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান নাজমুল হাসান পাপন। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থনে আরও কয়েকজন পরিচালক নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এরপর ফারুক বিসিবির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান।
তবে শুরু থেকেই তার কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি মাঠের পারফরম্যান্সেও নেই কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এসব কারণে বিসিবি সভাপতি হিসেবে তিনি প্রবলভাবে সমালোচিত হচ্ছেন।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএল বেটিংয়ে ১৬ বছর বয়সী ছেলে খোয়াল ৫০ হাজার রুপি, বাবার প্রশ্ন, বিসিসিআই কি করে
আইপিএল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি লিগ। তবে জনপ্রিয় হওয়ায় দুশ্চিন্তার জায়গাও আছে। অনলাইনে তথাকথিত ফ্যান্টাসি প্ল্যাটফর্মে আইপিএল নিয়ে দেদার বেটিং চলছে, আর এই অনলাইন বেটিংয়ের প্রচারণায় রয়েছেন তারকা ক্রিকেটাররাই।
উঠতি বয়সী ক্রিকেটপ্রেমীরা জড়িয়ে পড়ছেন অনলাইন বেটিংয়ে এবং অনেক অর্থও তাঁরা খোয়াচ্ছেন। ব্যাপারটি কারও কারও চোখে ‘নীরব মহামারি’। ফোনে বেটিংয়ের অ্যাপস চালু করে এতে মনোযোগ দিতে গিয়ে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ও মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে।
ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএস এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিছু মা–বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। দিল্লির ৫৫ বছর বয়সী মণীষ আইএএনএসকে জানান, তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছেলে অনলাইন বেটিংয়ে ৫০ হাজার রুপি খুইয়েছে। এরপর তিনি ছেলের ফোন থেকে অনলাইনে বেটিংয়ের তিনটি অ্যাপস মুছে ফেলেন। মণীষ প্রশ্ন রেখেছেন অনলাইন বেটিংয়ের প্রচারণা চালানো তারকা ক্রিকেটারদের কাছে, ‘এটা হৃদয়বিদারক। ক্রিকেট এত দিন ছিল প্রেরণার ও খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার। আমার নায়কেরা কেন এমন কিছুর প্রচারণা চালাচ্ছেন, যেটা খুব বিপজ্জনক।’
আরেকজন অভিভাবক হতাশা প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘বিসিসিআই অর্থ আয়ে ব্যস্ত, আমাদের সন্তানদের কী হচ্ছে, সেটা তারা পাত্তা দেয় বলে মনে হয় না। শীর্ষসারির ক্রিকেটাররা এসব অ্যাপসের প্রচারণা চালাচ্ছে, কিন্তু বোর্ড তাদের নিবৃত্ত করছে না। এমনকি কিছু (বেটিং) প্ল্যাটফর্ম বড় টুর্নামেন্টের স্পনসরও হচ্ছে। তারা স্মার্ট—এটাকে তারা বলে ফ্যান্টাসি খেলা, কিন্তু এটার সঙ্গে অর্থ জড়িত এবং দ্রুত আয়ের একটা পথ ভেবে অল্প বয়সীরা এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে।’
আরও পড়ুনযে পাঁচ কারণে কোহলি স্বপ্নপূরণের খুব কাছে৫ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক সময়ে একটি পরিবার আইপিএলের ম্যাচ দেখতে গিয়ে খেয়াল করে, অনেক দর্শক ফোনে সবার সামনেই বেটিং করছেন, ‘আমরা দেখেছি কিশোররা স্টেডিয়াম থেকে ফোনে কল করে লাইভ বেটিং করছে। সংখ্যায় তারা প্রচুর।’
ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঝেমধ্যেই অবৈধ বেটিংয়ের চক্র ধরতে অভিযান চালায় এবং সফলও হয়। কিন্তু ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের ছদ্মবেশে মুঠোফোনের বেটিং অ্যাপস নিয়মনীতি ফাঁকি দিয়ে কম বয়সী কিংবা পরিণত ব্যক্তিদেরও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করছে।
সমালোচকেরা মনে করেন, বিসিসিআইকে এ নিয়ে অবশ্যই নৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এখনো চুপ করে থাকায় ভারতের জনমনে প্রশ্ন জাগার পাশাপাশি সন্তানদের নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায়ও পড়েছে। বেটিংয়ের এসব প্ল্যাটফর্মে আইপিএলের বড় তারকাদের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
আইএএনএস জানিয়েছে, ভারতে এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। সমর্থক ও অভিভাবকদের চাওয়া, বিসিসিআই এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে; তথাকথিত এসব গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর স্পনসর ও এনডোর্সমেন্ট বাতিল করবে। ক্রিকেটাররা আরও দায়িত্বশীল হতে এসবের প্রচারণা যেন না চালান, সেটাও তাদের প্রত্যাশা।
আরও পড়ুনআইপিএলে জরিমানাও কোটি টাকা, বড় ক্ষতি কার২৯ মে ২০২৫