কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় গ্রেপ্তার ৩ ছিনতাইকারী
Published: 30th, May 2025 GMT
রাজধানীর মগবাজারে শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের আলোচিত ঘটনায় জড়িতদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলো মো. শামিম, জীবন ওরফে হৃদয়, সোহেল রানা ও মকবুল হোসেন। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগর ও আশপাশ এলাকায় ধারাবাহিকভাবে এ অভিযান চালানো হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ছিনতাইয়ে জড়িত তিনজন হেলমেট ও মাস্ক পরা ছিল। তাদের শনাক্ত করা সহজ ছিল না। এ জন্য নিয়মিত পদ্ধতিতে তথ্যানুসন্ধানের পাশাপাশি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তাদের সম্ভাব্য চেহারার অনেক আঙ্গিক তৈরি করে খোঁজ করা হয়। লোকজনকে দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয়, এমন কোনো লোককে দেখেছেন কিনা। এক পর্যায়ে সফলতা আসে। সরাসরি ছিনতাইয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। সেই সঙ্গে ছিনতাই করা মালপত্রের ক্রেতা মকবুল হোসেনকেও আইনের আওতায় আনা হয়। সে এই চক্রকে নানাভাবে সহায়তা করে। গ্রেপ্তার হলে জামিনের ব্যবস্থা করে বলেও জানা গেছে।
ডিবির এ কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ব্যাগ, ৯ হাজার ৬০০ টাকা, একটি মোবাইল ফোন, ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি, সুইচ গিয়ার চাকু ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। তারা পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় তারা ছিনতাই করত। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারে ঢাকার কেরানীগঞ্জ, বছিলা, ঢাকা উদ্যান, চাঁন মিয়া হাউজিং এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
গত ১৮ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে কুপিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযানে নামে হাতিরঝিল থানা পুলিশ ও ডিবি। এরই ধারাবাহিকতায় ছিনতাইয়ে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার ও ছিনতাই হওয়া মালপত্র উদ্ধার করে ডিবি।
এদিকে ২৪ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পল্লবী মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে ধারাল অস্ত্রের মুখে আল-আমিন রানা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। পল্লবী থানার ওসি শফিউল আলম জানান, ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোড়ল নামে একজনকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে লুণ্ঠিত মোবাইল ফোনটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।