ব্যাচেলর পয়েন্ট: নতুন সিজনে যারা অভিনয় করছেন
Published: 30th, May 2025 GMT
কাজল আরিফিন অমি পরিচালিত বহুল আলোচিত টিভি সিরিয়াল ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’। ২০১৯ সালের শেষের দিকে সিরিয়ালটির প্রথম সিজনের সম্প্রচার শুরু হয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলা ভিশনে। পাশাপাশি এটি মুক্তি পেয়েছে ধ্রুব টিভির ইউটিউব চ্যানেলে।
দর্শক চাহিদা মাথায় রেখে নির্মিত হয় সিরিয়ালটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় সিজন। ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল ধ্রুব টিভির ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায় তৃতীয় সিজনের শেষ পর্ব (৭৯)। এরপর চতুর্থ সিজন নির্মাণের দাবি জানান দর্শকরা। এ সিজন শেষ হয়েছে তাও আড়াই বছর আগে। বরাবরের মতো পঞ্চম সিজনের জোর দাবি ওঠে। কিন্তু তা আর হয়নি।
দীর্ঘ সময় বিরতি নিয়ে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের পঞ্চম সিজন নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছেন পরিচালক অমি। এরই মধ্যে নতুন সিজনের শুটিং শুরু করেছেন নির্মাতা কাজল আরিফিন অমি। এ খবর পাওয়ার পর থেকে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের ভক্তরা দারুণ উচ্ছ্বসিত। তবে নতুন সিজনে কারা কারা অভিনয় করছেন তা নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই।
আরো পড়ুন:
নাটকের আইটেম কন্যা টয়া
মেহজাবীনকে কেন ‘চার্লি চ্যাপলিন’ বলছেন?
পরিচালক অমি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সিরিজটির জনপ্রিয় চরিত্রে কে কে অভিনয় করছেন, তা জানাচ্ছেন। এ সিরিজের সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্রগুলো হলো— কাবিলা, পাশা, হাবু, শুভ, শিমুল, বজরা বাজারের জাকির, কাবিলার প্রেমিকা রোকেয়া, অন্তরা, লামিয়া। বরাবরের মতো কাবিলা চরিত্রে পাওয়া যাবে জিয়াউল হক পলাশকে। পাশা, হাবু, শুভ শিমুল চরিত্রে যথাক্রমে অভিনয় করছেন— মারজুক রাসেল, চার্ষী আলম, মিশু সাব্বির, শিমুল শর্মা।
বজরা বাজারের জাকির, অন্তরা, লামিয়া চরিত্রে দেখা যাবে সাঈদুর রহমান পাভেল, ফারিয়া শাহরিন ও লামিয়া লামকে। গত চার সিজনে কাবিলার প্রেমিকা রোকেয়াকে দেখানো হয়নি। সে নোয়াখালীতে বসবাস করে। কেবল মুঠোফোনে প্রেমিক কাবিলার সঙ্গে কথা বলে। নতুন সিজনেও রোকেয়া আছে। মজার ব্যাপার হলো, এই সিজনে রোকেয়াকে সামনে আনবেন পরিচালক। কিন্তু এ চরিত্র কে রূপায়ন করছেন তা এখনো জানানো হয়নি।
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটক প্রথম প্রচার হওয়ার পর দারুণ আকর্ষণ করে তরুণ প্রজন্মকে। বিশেষ করে ‘পাশা’ চরিত্র রূপায়নকারী মারজুক রাসেলের ‘এ্যাই’ সংলাপ দর্শকদের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে। এই ‘পাশা’ অর্থাৎ মারজুক রাসেল তার একজন প্রেমিকা চাচ্ছেন। পঞ্চম সিজনে পাশার প্রেমিকা থাকবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। যদি রাখা হয় তবে তা নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
তাছাড়া রানা চরিত্রে আবদুল্লাহ রানা, শিরিন চরিত্রে মনিরা মিঠু, পাগলা সুজন চরিত্রে আরফান মৃধা শিবলুসহ আরো অনেকে থাকছেন।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চর ত র পর চ ল স জন র
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টা শুল্কের কারণে ক্রয়াদেশ কম
তৃতীয় দফা আনুষ্ঠানিক আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় আজ শুক্রবার থেকে বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। বাড়তি শুল্কহার শেষ পর্যন্ত কত শতাংশে স্থির হয় সেটি ফয়সালা না হওয়ায় মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগামী মৌসুমে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কম দিচ্ছে। আবার কিছু ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় চলে এলেও তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা আগের মতো উদ্বিগ্ন নন। কারণ, দুই-তিন দিন ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মার্কিন বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে যে ইঙ্গিত পাচ্ছেন তাতে বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনামের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। এ ছাড়া প্রতিযোগী দেশ ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমানে বসন্ত ও গ্রীষ্মের ক্রয়াদেশ আসার মৌসুম। তবে পাল্টা শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়বে। তাতে তৈরি পোশাকের বিক্রি কমবে। সেটি অনুমান করে মার্কিন বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিশ্রুতির চেয়ে ১০-২০ শতাংশ কম ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ দিতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছে। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনাম, ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার কাছাকাছি নামিয়ে আনা গেলে বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা তৈরি হবে। তার কারণ চীন থেকে ব্যাপক হারে ক্রয়াদেশ সরবে।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘পাল্টা শুল্ক নিয়ে আমরা খুব বেশি ভয় পাচ্ছি না এখন। তবে বাড়তি শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের চাহিদা কমবে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই ক্রয়াদেশও কিছুটা কমতে পারে। বাড়তি শুল্ক কার্যকর ও শুল্কহার নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলে আগামী ৩-৪ মাস হয়তো ক্রয়াদেশ কম থাকতে পারে। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনামের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে পারলে ক্রয়াদেশ বাড়বে।’
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তখন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক ছিল ৩৭ শতাংশ। তিন মাসের জন্য এ সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হবে ৩৫ শতাংশ, যা কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে পণ্য রপ্তানি করেন। নতুন হার কার্যকর হলে তা ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কহার কমাতে তৃতীয় দফার আলোচনা করতে বর্তমানে ওয়াশিংটনে রয়েছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষ করেছে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
দেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী ইভিন্স গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। তাদের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ২৫ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।
জানতে চাইলে ইভিন্স গ্রুপের পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রয়াদেশ আসার গতি বর্তমানে কিছুটা ধীর। পাল্টা শুল্ক শেষ পর্যন্ত কত দাঁড়ায় তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে বাড়তি এই শুল্ক শেষ পর্যন্ত মার্কিন ক্রেতাদের দিতে হবে। ফলে বাড়তি শুল্ক কার্যকর হলে দেশটিতে বেসিক বা নিত্য ব্যবহার্য তৈরি পোশাকের বিক্রি কমবে। আমরা এসব সস্তা পোশাকই বেশি রপ্তানি করি। ফলে আমাদের রপ্তানি কমতে পারে।’
দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থবছরে রপ্তানি করে ৩০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তার একটি বড় অংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।
স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শোভন ইসলাম বলেন, ‘মার্কিন বড় ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক সোর্সিং অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিশ্রুত ক্রয়াদেশ ১০-২০ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে। এপ্রিলে আমরা যেসব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ৫ শতাংশের মতো মূল্যছাড় দিয়েছিলাম, সেটি বসন্ত ও গ্রীষ্ম মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করছে।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক শীর্ষ বড় বাজার। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৮৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশের কিছু বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের ৮৫ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক। এ ছাড়া মাথার টুপি বা ক্যাপ, চামড়ার জুতা, হোম টেক্সটাইল, পরচুলা ইত্যাদি বেশি রপ্তানি হয়।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বর্তমানে ক্রয়াদেশ কিছুটা কম। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশের পণ্যে শুল্ক কত দাঁড়াচ্ছে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এ ছাড়া আমাদের পাল্টা শুল্ক কমবে বলে আমরা আশাবাদী।’