মাদারীপুরের রাজৈরে কনস্টেবলকে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়া ৩০ রাউন্ড শটগানের বুলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৩০ মে) ভোরে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়। 

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোরে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকায় গণেশ পাগল সেবাশ্রমে আয়োজিত কুম্ভমেলায় জুয়াড়িদের সঙ্গে দুই পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও জুবায়ের হাসানের হাতাহাতি হয়। এ সময় হামলা চালিয়ে তাদের দুজনকে মারধর করে জুয়াড়িরা। একপর্যায়ে কনস্টেবল মেহেদীর সঙ্গে থাকা সরকারি শটগানের ৩০ রাউন্ড বুলেট নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উদ্ধার অভিযানে নামে থানা পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে মহামানব গণেশ পাগল সেবাশ্রম কমিটির সভাপতি মিরন বিশ্বাসসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার রাতেই মাদারীপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে নিয়োজিত দুই কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও জুবায়ের হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়।

পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সে আছেন। 

ওই ঘটনার সময় তার সঙ্গে কতজন ছিলেন, জানতে চাইলে কনস্টেবল মেহেদী কল কেটে দেন। এ বিষয়ে জানতে প্রত্যাহার হওয়া আরেক পুলিশ সদস্য জুবায়ের হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, শটগানের ৩০ রাউন্ড বুলেট পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ডকুমেন্টস রেডি হচ্ছে। তবে, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার নেই। একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে বুধবার (২৮ মে) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় প্রায় দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা বা গণেশ পাগলের মেলা, যা স্থানীয়ভাবে কামনার মেলা নামেও পরিচিত। মেলাটি চলে পাঁচ দিন পর্যন্ত। প্রতি বছরই জুয়া ও গাঁজার আসর বসানো এ মেলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শুধু তাই নয়, পুতুল নাচ ও যাত্রাপালার নামে চলে অশ্লীল নৃত্য।

ঢাকা/বেলাল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরে মেলায় জুয়ার আসরে অভিযানে সংঘর্ষ, পুলিশের বন্দুক ছিনতাই

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে গণেশ পাগলের কুম্ভমেলায় পুলিশের সঙ্গে জুয়াড়িদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করে ৩০টি গুলি ছিনিয়ে নিয়েছে জুয়াড়িরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে কদমবাড়ি গণেশ পাগল সেবাশ্রমের মেলা প্রাঙ্গণে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে গতকাল রাতে মেহেদি হাসান ও জুবায়ের হাসান নামের দুই কনস্টেবলকে মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাদাপোশাকে ওই দুই পুলিশ সদস্য মেলার মাঠে জুয়ার আসরে গেলে জুয়াড়িদের সঙ্গে তাঁদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে এবং কনস্টেবল মেহেদির সঙ্গে থাকা শটগানের গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নেয় জুয়াড়িরা। ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মেলার আয়োজক কমিটি জানায়, বুধবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী গণেশ পাগলের কুম্ভমেলা শুরু হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও কিছু অসাধু চক্র মেলায় জুয়া ও মাদকের আসর বসিয়েছে। তবে এসব প্রতিরোধে প্রশাসনের দৃশ্যমান তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ তাদের।

সেবাশ্রম কমিটির সভাপতি মিরণ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা যতবার জেনেছি, পুলিশের সহায়তায় জুয়ার আসর বন্ধ করেছি। তবে এবার তারা কিছুটা দূরে গিয়ে জুয়ার আসর বসিয়েছে।’ প্রকাশ্যে গাঁজা সেবনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেও কিছু করতে পারছি না। প্রশাসনও পারেনি। এখন আমরা কী করব?’গতকাল রাতে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হালকা বৃষ্টির কারণে মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা কম। কালীমন্দিরসংলগ্ন এলাকায় প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন ও বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। সেখানে শতাধিক মাদকসেবীকে একত্রে বসে গাঁজা সেবন করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে সচেতন নাগরিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় মেলার পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

মেলার মাঠে জুয়ার আসর পরিচালনাকারী মাসুদ নামের এক জুয়াড়ি বলেন, ‘জুয়ার খোটের বিষয় সব কমিটির (গণেশ পাগল সেবাশ্রম কমিটি) লোকজন জানেন, আমি কিছু জানি না। আমাকে দুই হাজার টাকা বেতনে কাজ করাত। পুলিশের সঙ্গে জুয়াড়িদের মারামারির পরে সবগুলো আসরই এখন বন্ধ।’

মেলায় আসা দর্শনার্থী সুজয় কর্মকার বলেন, ‘মেলার দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টিতে ভিজেই এসেছি। এখানে সবকিছুর ব্যবস্থাপনা ভালো হলেও মেলায় মাদক সেবন বন্ধ করা অতিজরুরি। এতে চারপাশের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। যারা দূরদূরান্ত থেকে এসেছে, তাদের মধ্যেও ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হচ্ছে।’

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের কনস্টেবল মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে আছেন। তাঁর কাছ থেকে ৩০টি গুলি ছিনতাইয়ের বিষয়টা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা দেখছেন।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনার পর দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। মেলায় মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদারীপুরে ছিনতাই হওয়া পুলিশের ৩০টি গুলি উদ্ধার, থানায় মামলা
  • মাদারীপুরে মেলায় জুয়ার আসরে অভিযানে সংঘর্ষ, পুলিশের বন্দুক ছিনতাই