পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ৩০ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার
Published: 30th, May 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈরে কনস্টেবলকে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়া ৩০ রাউন্ড শটগানের বুলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩০ মে) ভোরে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোরে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকায় গণেশ পাগল সেবাশ্রমে আয়োজিত কুম্ভমেলায় জুয়াড়িদের সঙ্গে দুই পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও জুবায়ের হাসানের হাতাহাতি হয়। এ সময় হামলা চালিয়ে তাদের দুজনকে মারধর করে জুয়াড়িরা। একপর্যায়ে কনস্টেবল মেহেদীর সঙ্গে থাকা সরকারি শটগানের ৩০ রাউন্ড বুলেট নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উদ্ধার অভিযানে নামে থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে মহামানব গণেশ পাগল সেবাশ্রম কমিটির সভাপতি মিরন বিশ্বাসসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতেই মাদারীপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে নিয়োজিত দুই কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও জুবায়ের হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সে আছেন।
ওই ঘটনার সময় তার সঙ্গে কতজন ছিলেন, জানতে চাইলে কনস্টেবল মেহেদী কল কেটে দেন। এ বিষয়ে জানতে প্রত্যাহার হওয়া আরেক পুলিশ সদস্য জুবায়ের হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, শটগানের ৩০ রাউন্ড বুলেট পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ডকুমেন্টস রেডি হচ্ছে। তবে, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার নেই। একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে বুধবার (২৮ মে) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় প্রায় দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা বা গণেশ পাগলের মেলা, যা স্থানীয়ভাবে কামনার মেলা নামেও পরিচিত। মেলাটি চলে পাঁচ দিন পর্যন্ত। প্রতি বছরই জুয়া ও গাঁজার আসর বসানো এ মেলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শুধু তাই নয়, পুতুল নাচ ও যাত্রাপালার নামে চলে অশ্লীল নৃত্য।
ঢাকা/বেলাল/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি