নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শেষাংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় মেরিন ড্রাইভে আঘাত হানছে। এতে টেকনাফ অংশের দুই কিলোমিটারের বিভিন্ন জায়গায় চারটি অংশে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন প্রতিরোধে দেওয়া জিও টিউব ব্যাগ ফুটো হয়ে ক্রমেই বিলীন হচ্ছে। পাশাপাশি জোয়ারে ভেঙে পড়া ঝাড় গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা।

এর আগে গত বছর ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে পূর্ণিমার জোয়ারের ধাক্কায় মেরিন ড্রাইভের একই অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। ওই সময় সেনাবাহিনীর ইসিবি (ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন) জিও টিউব ব্যাগের মাধ্যমে মাটির বাঁধ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করে।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, জোয়ারের ধাক্কায় মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হচ্ছে। ধসে পড়ছে জিও টিউব বাঁধ। টেকনাফের মুন্ডার ডেইল, বাহারছড়া ও শীলখালীর একটি অংশ ভেঙে গেছে। এ সময় জোয়ারে আঘাতে ভেঙে পড়া ঝাড় গাছ সাবরাং মুন্ডার ডেইল ঘাটে দুই শ্রমিক দিয়ে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় মো.

ফিরোজ।

জানতে চাইলে ফিরোজ বলেন, সাগরের জোয়ারের আঘাতে বেশ কিছু ঝাড় গাছ ভেঙে পড়েছে। অনেকে সেই গাছ নিয়ে যাচ্ছে। তবে এই গাছ আমি নিয়ে যাচ্ছি না। ওই দুই শ্রমিকরা গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
 
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ সলিম বলেন, শুক্রবার দুপুরে মেরিন ড্রাইভের মুন্ডার ডেইল ও বাহারছড়া ঘাটে কয়েকটি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। সড়কের পশ্চিম পাশে বসানো জিও ব্যাগের বাঁধ বিলীন হচ্ছে। তবে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, মেরিন ড্রাইভের অনেক জায়গায় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে সমুদ্রের বালু তুলে জমি ভরাট করছেন। সৈকত থেকে অবাধে বালু তোলায় মেরিন ড্রাইভের গোড়ার অংশ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এখন জোয়ারের ধাক্কায় নড়বড়ে অংশের মেরিন ড্রাইভে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। এছাড়া মেরিন ড্রাইভের ভেঙে যাওয়া অংশগুলো সমুদ্র তীর থেকে বালু ভাঙন রোধ করছে। সেই কারণেও বারবার এসব এলাকাগুলো ভাঙছে।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ভাঙনের খবরে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। মেরিন ড্রাইভের রক্ষণাবেক্ষণ করে সেনাবাহিনী। ঢেউয়ের আঘাতে মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া ঝাড় গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া বিষয়টি দেখা যাচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট কন ফ

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিবিতে নড়বড়ে ফারুক, কাজ করতে আগ্রহী বুলবুল

জুলাই আন্দোলনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমেদ। সরকারের চাওয়ায় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় সরাসরি বিসিবি পরিচালক হন তিনি। পরে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পালনের ৯ মাস না যেতেই সরকার বোর্ডে তাকে চাচ্ছে না। যে কারণে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।

বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টার বাস ভবনে বৈঠক করেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সেখানে বিসিবি সভাপতিকে পদত্যাগ করতে বলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা আছে বলে জানানো হয়েছে বর্তমান বোর্ড সভাপতিকে।

তবে সাবেক ক্রিকেটার, বিসিবির সাবেক নির্বাচক ও বর্তমান সভাপতি এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেননি বলেও জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, তিনি ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছেন।

ফারুক আহমেদকে পদত্যাগ করতে বলার মধ্যেই খবর এসেছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব দিতে চায় সরকার। বিষয়টিয়ে নিয়ে বুলবুল সমকালকে বলেছেন, তার সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি কাজ করতে আগ্রহী।

আমিনুল ইসলাম বুলবুল সমকালকে বলেন, ‘ক্রীড়া উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাকে বলা হয়েছে। আমি বলেছি, কাজ করতে আগ্রহী। আইসিসি থেকেও সবুজ সংকেত দিয়েছে (বুলবুল আইসিসির এশিয়ান ক্রিকেটের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার)। তবে আমি নির্বাচনে দাঁড়াবো না। বিসিবিকে একটা জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে চলে যাবো।’

বিসিবির সভাপতি হওয়ার পর বারবার বিতর্কিত হয়েছেন ফারুক আহমেদ। বিপিএলে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফের পাওনা ঠিকঠাক শোধ করেনি ফ্র্যাঞ্জাইজি। যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। বিপিএলে ফ্র্যাঞ্জাইজি বন্টন নিয়ে ফারুক আহমেদের পছন্দ-অপছন্দ গুরুত্ব পেয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।

এরপর নিজের পছন্দ মতো ব্যাংকে বিসিবির এফডিআর স্থানান্তর করেছেন ফারুক আহমেদ, এমন অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধ। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ব্যক্তিগত তীক্ততার জেরে চাকরিচ্যুত করেছেন বলেও অভিযোগ আছে। এসব কারণে তাকে পদত্যাগ করতে বলে থাকতে পারেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে ফারুক আহমেদকে পদত্যাগ করতে বললেও পদত্যাগ করা না করার সিদ্ধান্ত নিতান্ত বোর্ড সভাপতির। কারণ কাগজে-কলমে তিনি নির্বাচিত বিসিবি সভাপতি। সরকারের তাই তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাকে জোরপূর্বক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলে সেটা সরকারি হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে করে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট। ফারুক আহমেদ তাই পদত্যাগ না করলে ক্রীড়া উপদেষ্টা বা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু করার নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিসিবিতে নড়বড়ে ফারুক, কাজ করতে আগ্রহী বুলবুল