ভুল অস্ত্রোপচারে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ
Published: 30th, May 2025 GMT
নীলফামারীর সৈয়দপুরে চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপচারে সোগরা বেগম (৩২) নামের এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার শহীদ তুলসীরাম সড়কে গ্রীন লাইফ ল্যাব অ্যান্ড হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দিয়েছেন।
সোগরা বেগম সাহেবপাড়া আমিন মোড় এলাকার আরিফ হোসেনের স্ত্রী। এ দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোগরা বেগমের ভ্রূণ জরায়ুর বাইরে প্রতিস্থাপিত। একে বলে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। এ সমস্যা নিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে গ্রীন লাইফ ল্যাব অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি হন। চিকিৎসক জানান অস্ত্রোপচার করতে হবে। রাত ২টার দিকে তাঁকে ওটিতে নেওয়া হয়। ডা.
এক ঘণ্টার পর চিকিৎসক জানান, তাঁর অবস্থা ভালো না, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। তারাই অ্যাম্বুলেন্সও নিয়ে আসে। সোগরা বেগমকে স্বজনরা রংপুরে না নিয়ে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেন। সেখানকার চিকিৎসক জানান, রোগী আগেই মারা গেছেন। স্বজনেরা লাশ আবার গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ক্ষুব্ধ স্বজনেরা ঘটনার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন।
সোগরা বেগমের বোন শাহজাদী বেগম জানান, সোগরার ভ্রুণ জরায়ুর বাইরে গর্ভনালিতে বড় হচ্ছিল। ডা. ওয়াজিরা শেফাত জাহান শান্তা তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। এক ঘণ্টা পর বের হয়ে বলেন, রংপুরে নিতে হবে। এরপর ওপর তলায় চলে যান। অনেক ডাকাডাকির পরও নিচে নামেননি। পরে হাসপাতালের ম্যানেজারও পালিয়ে যান।
গ্রীন লাইফ ল্যাব অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক নাজমুল হুদা জুয়েল বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। রোগীকে কোনো চিকিৎসকই ইচ্ছে করে মারেন না। এটি একটি দুর্ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে বসে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি