তাহিরপুরে পর্যটকবাহী ‘রাহাবার’ নামে এক হাউসবোটে আকস্মিক আগুন লেগে পুড়ে গেছে। হাউসবোটে থাকা ১২ পর্যটক অল্পের জন্যে রক্ষা পেয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পর্যটন স্পট শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী) সংলগ্ন পুটিয়া গ্রামের সামনে নদীতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

রাত ৯টার দিকে ‘রাহাবার’ হাউসবোটের স্টাফ মো.

ইব্রাহিম খলিল সমকালকে জানান, শুক্রবার দুপুরে তাহিরপুর সদর ঘাট থেকে ১২ জন পর্যটক হাউসবোটযোগে প্রথমে টাঙ্গুয়া হাওরের ওয়াচ টাওয়ারে আসেন। এখান থেকে বিকেলে নিলাদ্রী লেকে এসে পুটিয়া গ্রামের সামনের নদীতে হাউসবোট নোঙর করেন। এসময় পর্যটকরা যার যার কেবিনের ভেতরে ছিলেন আর তারা রাতের খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন। হাউসবোটে জেনেরেটর চালানো ছিল। কেবিনের একজন তার মোবাইল ফোন চার্জের জন্য মাল্টিপ্লাগে লাগানো মাত্রই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। প্রথমে নৌকার স্টাফরা চেষ্টা করছিলেন আগুন নেভাতে, কিন্তু তারা পারছিলেন না, আগুন বাতাসের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠে। পরে সঙ্গে থাকা অন্য একটি পর্যটকবাহী নৌকায় ১২ জনকে দ্রুত তুলে দিয়ে কোনো রকম জীবন রক্ষা করেন।

তিনি বলেন, ‘চোখের সামনেই পুরো হাউসবোট দাউ দাউ করে জ্বলছিল, তখন কিছুই করার ছিল না।’

লেদারবন্দ গ্রামের ফেরদৌস আলম বলেন, তারা হঠাৎ বাড়ি থেকে চিৎকার শুনে বিন্দারবন্দ, পুটিয়া ও লেদারবন্দ গ্রামের লোকজন ছোট নৌকা যোগে গিয়ে নৌকার মাঝি ও পর্যটকদের রক্ষা করেছেন, না হলে আগুনে পুড়ে অথবা পানিতে ডুবে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। নৌকার মাঝি ও পর্যটকরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন।

তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সংবাদ পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, হাউসবোটে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, হাউসবোট পুড়ে গেলেও পর্যটকসহ নৌকার মাঝিরা অক্ষত আছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ আগ ন পর যটক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত

নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।

সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।

সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাট

আজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।

জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।

গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • সেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি