ফরিদপুরে রাস্তায় ফেলে কলেজছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ
Published: 30th, May 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দায় রাস্তায় ফেলে বৈশাখী ইসলাম বর্ষা (১৮) নামের এক কলেজছাত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ভাবুকদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় একটি ফেসবুক লাইভ ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
বর্ষা ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী ও ফরিদপুরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-সদস্য সচিব। সে উপজেলার ভাবুকদিয়া এলাকার বাবু শেখের মেয়ে বলে জানা যায়।
এদিকে, মারধরের সঙ্গে জড়িতদের আটক করতে গেলে লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপরে হামলা করা হয়। এ নিয়ে এখনও ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বর্ষার পরিবারের অভিযোগ, বর্ষার ছোট বোনকে এক ব্যক্তি পছন্দ করেন। তাকে ইভটিজিং করায় শুক্রবার বোনের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নগরকান্দা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বর্ষা। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আসার সময় স্থানীয় কয়েক যুবক বর্ষার চুল ধরে টানেন ও মারধর করেন। সেখানেই বর্ষা ফেসবুক লাইফে এসে তার ওপর হামলার কথা জানান। পরে সেখান থেকে উপজেলা প্রশাসন তাদের উদ্ধার করে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবি পর্যালোচনায় দুই কমিটি
সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)। এসব সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে দুই দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। পরে এটি সাত দফায় পরিণত হয়। তাঁদের দাবি, পর্যালোচনায় দুটি আলাদা কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ।
এর আগে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যমান পল্লী বিদ্যুৎ কাঠামো পর্যালোচনা করে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দেওয়ার কথা কমিটির। ওই কমিটিকে দ্রুত চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আজ বুধবার একটি চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় পবিসসমূহে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই কমিটির প্রতিবেদনের খসড়া উপস্থাপনের সময় অংশীজনদের দেওয়া মতামত যুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
আরইবি ও পবিস একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের দাবি পর্যালোচনায় ১৭ জুন একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এ কমিটি আগে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ বিবেচনাসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিবেদন জমা দেবে।
এ ছাড়া একই দিনে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে আরেকটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পবিসের চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের নিয়মিত করার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে তারা। সব মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বহাল, সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্ত এবং অন্যায়ভাবে বদলি করা কর্মীদের পদায়নের বিষয়টি সংবেদনশীলতা ও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে সুপারিশ করবে কমিটি।
গত বছরের শুরু থেকেই দুই দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে তাদের একজনের গ্রেপ্তারকে ঘিরে গত অক্টোবরে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা। এরপর থেকেই কারও কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ বিভিন্ন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে থাকে আরইবি। এরপর গত ২১ মে ৭ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন কয়েক হাজার কর্মী। গত ২৬ মে থেকে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের দাবি মানার আশ্বাসের ভিত্তিতে ৫ জুন আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
পবিসের দাবির মধ্যে আছে এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পবিস একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন করা; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা এবং মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিতে পুনর্বহাল।
এর আগে আন্দোলনকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি কয়েক দফা বৈঠক করলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর গত বছরের ২৩ অক্টোবর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ।