ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলামকে মারধর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে নগরকান্দায় মামলা তিনটি নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নারী নির্যাতন দমন আইন ও বাড়িতে হামলার ঘটনায় দুটি মামলার বাদী হয়েছেন বৈশাখী নিজে। এ মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অন্যদের অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে। অপর দিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার মামলার বাদী হয়েছেন নগরকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান। এ মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফর আলী বলেন, এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে যে ছয়জনকে আটক করা হয়েছিল তাঁদের তিনটি মামলাতেই আসামি দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

গত শুক্রবার বিকেলে নগরকান্দার ভবুকদিয়া এলাকায় নিজ বাড়ির পাশের সড়কে বৈশাখী ইসলাম ওরফে বর্ষার (১৮) ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। তিনি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া তাঁর ছোট বোনকে বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করতেন স্থানীয় শরীফ ব্যাপারী (২১) নামের এক তরুণ। এ ঘটনায় শুক্রবার নগরকান্দা থানায় একটি অভিযোগ দেন বৈশাখী। সেখান থেকে ফিরে আসার পথে ভবুকদিয়া এলাকায় তাঁর ওপর হামলা হয়।
ওই ঘটনার পরপরই বৈশাখী ফেসবুক লাইভে অভিযোগ করেন, বিএনপির নেতা–কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা করেছেন। তবে উপজেলা বিএনপির নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আরও পড়ুনফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী সংগঠককে মারধর, দোষীদের আটক করতে এসে পুলিশ হামলার শিকার৬ ঘণ্টা আগে

প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবি শামা ওবায়েদের
এদিকে বৈশাখীর ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। পাশাপাশি তিনি এ ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-২ সংসদীয় আসন। এখান থেকে বিএনপির প্রার্থী হন শামা ওবায়েদ।

নিজ নির্বাচনী এলাকায় এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ বৈশাখীর ওপর হামলার ঘটনায় প্রকৃত যাঁরা জড়িত, তাঁরা যে দলেরই হোক, তদন্ত করে তাঁদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে তিনি পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নগরক ন দ ব এনপ র ঘটন র ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচন সামনে রেখে ৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাদে অন্য কোনো নির্বাচনে নিউইয়র্কে এটাই সর্বোচ্চ আগাম ভোট পড়ার ঘটনা। আগামীকাল ৪ নভেম্বর নিউইয়র্ক নগরে মেয়র পদে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে।

গতকাল রোববার ছিল আগাম ভোট দেওয়ার শেষ দিন। এদিন প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। নগরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, আগাম ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ ভোট পড়ার ঘটনা। তা ছাড়া এদিন ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি ছিল। এর মধ্য দিয়ে আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের গড় বয়সও কমে এসেছে। গড় বয়স ৫০ বছরে নেমে এসেছে।

আগের সপ্তাহের প্রথম দিকে কম বয়সী ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল। ওই সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮০ হাজার নিউইয়র্কবাসী ভোট দিয়েছিলেন। তবে গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত এই সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৩৫ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গতকাল রোববারই এ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজারের বেশি।

আরও পড়ুনমামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা০২ নভেম্বর ২০২৫

নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।

নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।

নিউইয়র্কে সর্বপ্রথম মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয় ২০২১ সালে। ওই নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যায়নি। ওই নির্বাচনে এরিক অ্যাডামস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্লিওয়াকে দ্বিগুণের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন।

অবশ্য চলতি বছর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের সংখ্যা গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম ভোটকে ছাড়াতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০ লাখ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের বয়স তুলনামূলক কম। এটা অবাক করা বিষয়। কারণ, সাধারণত যারা আগাম ভোট দেন তাঁদের গড় বয়স মোট নিবন্ধিতদের গড় বয়সের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগে

চলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।

চলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।

গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের গড় বয়স ছিল ৫১ বছর। তবে এবার মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটারদের গড় বয়স আরও কমে ৫০ বছরে নেমেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ