শেখ হাসিনার বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে: প্রসিকিউটর
Published: 31st, May 2025 GMT
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার অভিযোগের মামলার বিচার কার্যক্রম রবিবার (১ জুন) থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এম এইচ তামিম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, ‘আগামীকাল (রবিবার) শেখ হাসিনার মামলার ফরমাল চার্জ দাখিল করা হবে ট্রাইব্যুনালে।কোর্ট প্রসিডিংস বিটিভির মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে সরাসরি সম্পচার করা হতে পারে।”
রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ
টাঙ্গাইলে হাসিনার নামে মামলা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তুলে নেওয়ার আবেদন
এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ পেয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এতে তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও সরাসরি নির্দেশসহ পাঁচটি অভিযোগ পেয়েছে। এছাড়া অন্য দুই আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।”
তাজুল ইসলাম বলেন, “গত দুই-তিন সপ্তাহ প্রসিকিউশন তদন্ত সংস্থার দেওয়া প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে। সেটা আগামীকাল রবিবার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) হিসেবে ট্রাইবুনালে দাখিল করবে।”
তিনি বলেন, “গত বছরের ১৪ আগস্ট একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়। দীর্ঘ ছয় মাস ২৮ দিন তদন্ত করে তদন্ত সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের সত্যতা পায়।”
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারান এই আন্দোলনে।
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ খ ল কর গণহত য হত য র রব ব র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।