বরিশালে জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলা ও পাল্টা হামলা হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নগরীর ফকিরবাড়ী রোড ও সদর রোডের সংযোগস্থলে এ হামলা করা হয়।

সংঘর্ষে জাতীয় পার্টি বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল, গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক হাসানসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

তাদের মধ্যে সাতজনকে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক হামলাকারীকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে নিসর্গ রিসোর্টে পেট্রোল বোমা হামলা

রংপুরে জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলা

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নগরীর ফকির বাড়ী রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করি। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আমরা নগরীর ফকির বাড়ী কার্যালয় থেকে সদর রোডের কাছাকাছি পৌঁছালে পেছন থেকে কিছু সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। তাৎক্ষণিক আমাদের নেতাকর্মীরা হামলাকারীদের প্রতিহত করে এবং ধাওয়া দিয়ে একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘হামলাকারীরা কে এবং কোন দলের তা জানি না। তবে কাদের উসকানিতে এবং কারা হামলা করেছে, তা জানতে হবে।’’

গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমীন বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টি নগরীতে মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এনসিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ও উগ্র স্লোগান দিচ্ছিলেন। যে কারণে আমরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। এ সময় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়।’’

তিনি আরো জানান, তাদের হামলায় গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক হাসান, গণঅধিকার পরিষদের মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদ সোহাগ ফরাজী, যুব অধিকার পরিষদের মিরাজসহ ১০-১২ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে সাতজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

মিজানুর রহমান জানান, হামলার ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা একজনকে মারধর করে গুরুতর আহত করে পুলিশের কাছে দিয়েছে। তিনি বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ ঘটনায় আরো বেশ কয়েক জন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলেও জানান তিনি। 
 

ঢাকা/পলাশ/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন ত কর ম র বর শ ল নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • গণঅধিকার পরিষদের নেতার বাড়িতে হামলা, সাবেক দুই এমপির নামে মামলা