রাজধানীর শান্তিনগরে বাসের ধাক্কায় মো. তাশিকুল ইসলাম (৭৩) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

আজ রোববার ভোরে শান্তিনগর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, তাশিকুল পরিবার নিয়ে সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে শান্তিনগর মোড়ের বেইলি রোডের মুখের রাস্তা পার হচ্ছিলেন তাশিকুল। এ সময় দ্রুতগতির একটি বাস তাঁকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে রমনা থানার একটি টহল দল ঘটনাস্থলে আসে। তারা তাশিকুলকে উদ্ধার করে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

তাশিকুলের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
রমনা থানার উপপরিদর্শক আবু হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, তাশিকুলকে চাপা দেওয়া বাস ও চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন ত নগর

এছাড়াও পড়ুন:

স্থানীয় শিল্পে কমলো কর অব্যাহতি সুবিধা

আগামী বছরের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের এলডিসি বা স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের কথা। তখন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিদ্যমান অনেক সুযোগ-সুবিধা কমে আসবে। ফলে স্থানীয় শিল্পকে প্রতিযোগিতা করেই বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হবে। সেই প্রস্তুতি এখন থেকেই নিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় শিল্পের বিকাশে অতিরিক্ত সুরক্ষা সুবিধা কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যাহার, কিছু ক্ষেত্রে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে দেশে উৎপাদিত কিছু পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তাতে পণ্যের দামও বাড়তে পারে।  প্রস্তাবিত বাজেটে এমন কিছু ঈঙ্গিত দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ।
খাত-সংশ্লিষ্টদের শঙ্কা, শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়লে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। তাতে বিনিয়োগের গতি মন্থর হয়ে পড়বে। কমে যাবে কর্মসংস্থান। 
প্রস্তাবিত বাজেটে প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট সাড়ে ৭ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
যারা ঘরবাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেছেন তারাও হোঁচট খেতে পারেন। কারণ রডের উৎপাদন পর্যায়ে আরোপিত সুনির্দিষ্ট কর প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে নির্মাণ খাতের প্রধান এই উপকরণটির দাম বাড়তে পারে। 
২০১৯ সাল থেকে হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট এবং উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ যন্ত্রাংশ আমদানি ও স্থানীয়ভাবে কেনার ক্ষেত্রে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছিল। তবে সরকারের টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব খাতে অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছরে তিন ধাপে ভ্যাট বসাতে যাচ্ছে সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে দুই বছরের জন্য এসব পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে। এরপরের দুই বছর ভ্যাটের এই হার হবে সাড়ে ৭ শতাংশ, যা ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তারপরের বছর ভ্যাট আরও বেড়ে ১০ শতাংশ হবে। এটি কার্যকর থাকবে ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে এ সময়ে পণ্যগুলোর উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ যন্ত্রাংশ আমদানি ও স্থানীয়ভাবে কেনার ক্ষেত্রে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা বহাল থাকবে। সরকারের এমন পদক্ষেপে বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। 
এ ছাড়া রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এসি ও কম্প্রেসরের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত সুবিধা কমানো হয়েছে। স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে ২০১১ সাল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছে। রাজস্ব বাড়াতে এখন এসব খাতের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যমান অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছর থেকে এসব পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট দিতে হবে। তবে এসব খাতে বিদ্যমান বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উৎপাদনের ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে সম্পূরক শুল্ক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের কারণে এসি-ফ্রিজের উৎপাদন খরচ ও দাম বেড়ে যাবে। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের পক্ষে এসব পণ্য কেনা অনেকটা কঠিন হয়ে যাবে। 
দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা রয়েছে। তবে এবারের বাজেটে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট দুই থেকে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সরকার ব্লেডের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ