সাইকেল চোরকে ঝুলিয়ে মারধর, থানায় গিয়ে চাইলেন বিচার
Published: 1st, June 2025 GMT
“যশোরের শার্শা থানার নাভারণ রেল বাজারের নির্মাণাধীন একটি ভবনে নিচ থেকে সাইকেল চুরির চেষ্টা করলে মো. জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে অন্তত ২০ জন সংঘবদ্ধ হয়ে বেআইনিভাবে আমাকে মারধর করে।”
রবিবার (১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শার্শা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে এ দাবি করে বিচার চেয়েছেন মো. রাকিবুল ইসলাম বিপ্লব।
বিপ্লব যশোরের বেনাপোল স্টেশন এলাকার মৃত হারুন শেখের ছেলে। তিনি একজন ভবঘুরে, চুরিই তার পেশা বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা
দুদকের মামলায় স্ত্রী-কন্যাসহ ফেঁসে যাচ্ছেন এসকে চৌধুরী
এর আগে, শনিবার (৩১ মে) বিকেলে শার্শা উপজেলার নাভারন বাজারে নির্মানাধীন একটি ভবন থেকে বাইসাইকেল চুরি করার সময় রাকিবুল ইসলাম বিপ্লবকে হাতেনাতে আটক করে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয়রা। একপর্যায়ে তাকে রশি দিয়ে বেঁধে একটি ভবনের লোহার সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেন তারা।
ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। এতেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। পরে রবিবার (১ জুন) দুপুরে বিপ্লবকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছে পুলিশ। হাসপাতাল থেকে ফিরে দায়ের করা মামলায় নয়জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনকে আসামি করেন বিপ্লব।
আসামিরা হলেন, ঝিকরগাছা থানার দক্ষিণ বুরুজ বাগান গ্রামের মাহাবুবুর রহমানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, পরুন্দারপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে আক্তারুল ইসলাম, রঘুনাথপুর ডাঙ্গী গ্রামের সেলিম উদ্দিন দুদুর ছেলে শাওন হোসেন, বিল্লাল হোসেনের ছেলে মাহফুজুর রহমান পিয়াস, শহিদ মির্জার ফেলে শাহিন মির্জা, রফিকুল ইসলাম, কুন্দিরপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে সাকিব, ঢাকা পাড়া গ্রামের মৃত জিন্নত আলীর ছেলে হাসান এবং শার্শা থানার উলশী গ্রামের নাজমুল গাজীর ছেলে সিয়াম হোসেন।
এদিকে, মামলার আগেই পুলিশ জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে আটক করে। পরে তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের সোপর্দ করে পুলিশ।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঢাকা/রিটন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক