বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতি মামলার এক আসামি ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে আজ রোববার মারা গেছেন। তাঁর নাম লালসংময় বম (৫৫)। তিনি বান্দরবানের ফারুকপাড়া এলাকার বাসিন্দা। কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্য সন্দেহে তাঁকে গত বছরের এপ্রিল মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

লালসংময় চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দী ছিলেন। দুই দিন আগে জামিনে মুক্তি পান তিনি। অসুস্থতা বেড়ে গেলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে শনিবার রাতে বান্দরবানের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আজ বেলা আড়াইটায় তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন বম স্যোশাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক থাংজেল বম। তিনি বলেন, জামিন পাওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে বাড়িতে আনার পর মৃত্যু হয়।

চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলী আসগর চৌধুরী বলেন, লালসংময় বম নামে একজন ক্যানসার রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অসুস্থ লালসংময় বমকে দুই দিন আগে আদালত জামিন দেন বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো.

ইকবাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, লালসাংময় বম নামের এক বন্দী দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। দুই দিন আগে তিনি জামিন পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বান্দরবানের দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় লালসংময়কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের এই ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন র হয় ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হওয়া দেশকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার’

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ১ বছর পূর্তিতে সরকারের কার্যক্রম, চ্যালেঞ্জ ও অগ্রগতি তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম।

তিনি বলেছেন, “আমরা ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া একটি দেশ পেয়েছিলাম। সেখান থেকে আবার স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনার কাজটা খুব কঠিন ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তা করতে পেরেছে।”

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে আসিফ নজরুল: জাস্ট ওয়েট করুন, কিছু দিনের মধ্যে ঘোষণা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর

প্রেস সচিব বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১০ দিনের মাথায় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সেই কুখ্যাত ‘স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বাতিল করেছি। আইনটির মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে লাখ কোটি টাকা লুট করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ট্রেন্ডার প্রক্রিয়ার তোয়াক্কা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো—‘আমি আর আমার দুলাভাই মিলে ঠিক করতাম কে কোথায় কাজ পাবে।’ এমন দুর্নীতির আইনি সুরক্ষা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে থাকতে পারে না।”

তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আমরা প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাজে হাত দিয়েছি, কোথাও বসে থাকিনি। পুলিশ, বিচার বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ, এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের সব জায়গায় সংস্কার আনার চেষ্টা করেছি “

তিনি আরো বলেন, “পুলিশ আমাদের একটা ২১ পাতার রিপোর্ট দিয়েছে। আগে যেভাবে জনদমন হত, এখন তার পরিবর্তে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। গত ১ বছরে কোথাও পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে কি না দেখুন।”

সংলাপে তিনি বিচার বিভাগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “জাজ নিয়োগে আমরা বড় ধরনের সংস্কার এনেছি। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিচারক নিয়োগ হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে আমরা যতটা সম্ভব স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি। বিচার বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে।”

“মূল্যস্ফীতি এখন ৮ শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে। এটা কমিয়ে আনা সহজ কাজ নয়। একবার মূল্যস্ফীতি আটকে গেলে তাকে নামিয়ে আনা খুবই কষ্টসাধ্য। আমরা সেটা করতে পেরেছি,” যুক্ত করেন প্রেস সচিব।

প্রেস সচিব আরো বলেন, “টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত পদক্ষেপ রিজার্ভ বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।”

রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, “এনবিআরে হস্তক্ষেপ করে কিছু সংস্কার এনেছি। এনবিআরের এই সংস্কারের সুফল শিগগিরই দৃশ্যমান হবে। বিআইডিএ-তেও সংস্কার এনেছি। আগামী সরকারের সময় বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।”

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “একটি-দুটি জঘন্য অপরাধ ঘটেছে, এটা আমরা অস্বীকার করি না। কিন্তু সামগ্রিক চিত্র দেখুন। আমাদের পুলিশকে পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। আমরা তথ্য লুকাই না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন একটি স্থিতিশীল অবস্থায় আছে এবং ভবিষ্যতে আরো উন্নতি হবে। পুলিশের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।”

শফিকুল আলম বলেন, “আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের ১ বছর হয়ে গেছে। আমরা কতটুকু সফল বা ব্যর্থ, তা জনগণ বিচার করবে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, এ সরকার দেশের ভিতকে আবার শক্ত করে তুলতে পেরেছে।”

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ