চাকরি হারাচ্ছেন ৩৯ চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী
Published: 1st, June 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা ও সহিংসতা ও বিধিভঙ্গের অভিযোগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ চিকিৎসক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি হারাচ্ছেন। একই সঙ্গে আরও ১০ জনকে তিরস্কার ও সতর্ক করা হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্ত এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের আওতায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় আংশিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত হলে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সহিংসতায় জড়িত ১৫ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা
গত বছরের ৪ আগস্ট ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা, মারামারি, ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৬ (ঠ) ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে পদচ্যুতির সুপারিশ করে, যা সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন—চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের ডা.
সরাসরি সংঘর্ষে জড়িত ১৯ চিকিৎসক
একই ঘটনায় ছাত্রজনতার সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আরও ২৩ চিকিৎসককে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরও চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান, নিউরোলজির অধ্যাপক ডা. মো. আহসান হাবিব, ক্লিনিক্যাল অনকোলজির অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ, এবং আরও অনেকে।
এক শিক্ষকের অভিযোগে আরেকজন বরখাস্ত
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. এএইচএম জহুরুল হকের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গ করে পদোন্নতির আবেদন করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকেও চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগকারী ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার।
সিন্ডিকেট সভায় বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের তিরস্কার
সিন্ডিকেট সভা চলাকালে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার, গালাগাল এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ৯ চিকিৎসক ও ১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাদের তিরস্কার ও সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৈষম্যের শিকার কর্মচারীদের স্বীকৃতি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার ২২ জন কর্মচারীকে ভুতাপেক্ষাভাবে সব আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৯৬ জনের চাকরি স্থায়ী এবং ২২ জনের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
উপ-উপাচার্যের বক্তব্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ সমকালকে জানান, “তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে, তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে নেওয়া হবে।”
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক চ কর চ ক ৎসক তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি