লঙ্কা সফরের আগে দুশ্চিন্তায় পেসারদের চোট
Published: 2nd, June 2025 GMT
শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট খেলতে পারবেন না তাসকিন আহমেদ। সম্পূর্ণ ফিট হয়ে ওয়ানডে বা টি২০ সিরিজ খেলতে পারবেন সেই নিশ্চয়তাও দিতে পারছে না বিসিবির মেডিকেল বিভাগ। তাসকিনের না থাকার সঙ্গে পেস বিভাগে নতুন করে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে শরিফুল ইসলামের চোট।
বিসিবি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পেশির চোট পাওয়া শরিফুলকে অন্তত দুই সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হবে। আইপিএল থেকে বাঁহাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির হাড়ের চিড় নিয়ে দেশে ফেরা মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে তিন সপ্তাহ। এভাবে একের পর এক পেসারের চোটে পড়া জাতীয় দলের বোলিংয়ের শক্তি হ্রাস করেছে। এই তিন পেসার পুরো ফিট না হলে শ্রীলঙ্কা সফরে বোলিং নিয়ে ভুগতে হতে পারে বাংলাদেশকে।
এক বছর আগেও পেস বোলিং ইউনিটকে বড় মনে করা হচ্ছিল। তাসকিনের গোড়ালির হাড় বৃদ্ধিতে সেখানে বড় ধাক্কা লাগে। মূল বোলার চোটে থাকায় কোটা পূরণ করতে হচ্ছে বিকল্প তালিকা থেকে। অভিজ্ঞ এ পেসার না থাকায় তিন সংস্করণে খেলছেন তানজিম হাসান সাকিব। ফলে সাদা ও লাল বলের গেমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে গিয়ে খাবি খেতে হচ্ছে তাঁকে। ডানহাতি এ পেসার আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০ সিরিজে ভালো করতে পারেননি। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকেও এ দুই সিরিজে পুরোনো ছন্দে দেখা যায়নি। চোটপ্রবণ এ পেসার চোটেও পড়েন পাকিস্তানে। সিরিজের শেষ ম্যাচটি খেলা হয়নি তাঁর।
বিসিবির প্রধান ফিজিশিয়ান দেবাশীষ চৌধুরীর কাছে তিন পেসারের চোট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তাসকিনের ব্যাপারটা বলা কঠিন। তার সময় লাগবে। মাত্র ৭০ ভাগ ফিট হয়েছে। টেস্টে তো খেলতে পারবেই না, ওয়ানডে বা টি২০ খেলতে পারবে কিনা, তা পরে বলতে পারব। শরিফুলের বিষয়টি আমি পরিষ্কার না। গ্রোইনে ব্যথা থাকলেও এমআরআই রিপোর্টে তেমন কিছু নেই। দেশে ফিরলে পর্যবেক্ষণ করে বলতে পারব গভীর চোট না হালকা। আশা করা যায়, শ্রীলঙ্কা সিরিজে দল নির্বাচনে মেডিকেলি ফিট থাকবে। মুস্তাফিজের হাড়ে চিড় এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। আর দুই সপ্তাহ পর খেলায় ফিরতে পারবে। শ্রীলঙ্কা সফরের এখনও দেরি আছে। তার আগেই ফিট হয়ে যাবে।’
এবার টেস্ট দিয়ে শ্রীলঙ্কা সফর শুরু। মুস্তাফিজ খেলেন সাদা বলের ক্রিকেট। সে ক্ষেত্রে পুরো ফিট হয়ে খেলায় ফিরতে পারবেন বাঁহাতি এ পেসার। তিন পেসারের চোট থাকায় পাকিস্তানে হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসানের সঙ্গে খালেদ আহমেদকে খেলতে হচ্ছে। হাঁটুর চোট থেকে ফেরা এবাদত হোসেনকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে অপেক্ষা করতে হবে। শ্রীলঙ্কা সফরে হাসান, খালেদ, সাকিবের সঙ্গে নাহিদ রানা থাকবেন। বিকল্প প্রয়োজন হলে নেওয়া হবে শরিফুল ইসলামকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ ট হয়
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী নেত্রীর ওপর হামলা: নির্দোষ দাবি করে অভিযুক্তের ফেসবুক লাইভ
ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত সাগর কাজী নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
সোমবার সকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে সাগর কাজী নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দায় চাপান বিএনপির নগরকান্দা উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যার ওপর। লাইভের পরপরই তিনি ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেন।
ফেসবুক লাইভে সাগর কাজী বলেন, ‘এখানে রাজনীতি করতেছেন বদিউজ্জামান তারা মোল্যা। তিনি রাজনৈতিক ইস্যু করে ফেলছেন। তিনি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন, নিজে সালিশ করেছেন, তাকে অমান্য করে বৈশাখী।’
তারা মোল্যাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘সে আমাকে এখন চিনে না, আমাকে জড়িয়ে দিচ্ছে। আরে মিয়া আমারে চিনেন না, আপনার সাথে ব্যানার করলাম, বিএনপির যখন ব্যানার করলাম, আপনি তখন চিনেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এখন আমি বিপদে পড়েছি, আমাকে চিনেন না। আমার ওপরে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা মোল্যা সেদিন বলেছেন, বিএনপির কোনো লোক ছিল না ওখানে, কিন্তু সব তারা মোল্যার লোকজন ছিল। তারা মোল্যা শেল্টার দিয়ে সবকিছু করাইছে।’
এ সময় সাগর কাজী মারধরের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি আর আব্বু নাকি পিটাইছি, একটা মানুষকে যদি ২০ থেকে ২৫ মিনিট পেটানো হয় তাহলে তার এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকা উচিত। আমাদের পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড নষ্ট করার জন্য মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমার বাড়িতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব আসতেছে।’
সাগর আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে নিজে ছিলেন তারা মোল্যা। নিজেই সালিশ করেছেন। এখন বলেন তিনি ছিলেন না। আমি তো তার নির্দেশ অমান্য করিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সে এখন বলছে, বিএনপির কেউ ছিল না। অথচ তার লোকজনই তো ছিল।’
ফেসবুক লাইভের বিষয়ে জানতে চাইলে বদিউজ্জামান তারা মোল্যা বলেন, ‘ওতো (সাগর কাজী) আমাকে আর বৈশাখী নিয়ে যেসব কথা বলছে, তাহলে বোঝেন কেমন লোক। কারণ, সাগর যুবলীগ নেতা ফরহাদের লোক। ওরা এখনও চাচ্ছে যে বিএনপিকে কীভাবে হেনস্তা করা যায়। আমার দল করলে অবশ্যই চিনতাম। ওদের আমার দলে মিশিয়ে তো আমি দল থেকে বহিষ্কার হতে চাই না।’
গত ৩০ মে বিকেলে ফরিদপুরের নগরকান্দার ভবুকদিয়া গ্রামে বৈশাখীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে সাগর কাজী, তার বাবা সেকেন কাজী, স্থানীয় বিএনপি নেতার সমর্থকদের নাম উঠে আসে।
বৈশাখীর দাবি, তার ছোট বোনকে স্থানীয় শরিফ ব্যাপারী উত্ত্যক্ত করেছিলেন। পুলিশ তাকে আটক করলে উত্তেজিত হয়ে সাগর ও তার লোকজন হামলা চালায়। পরে রাত ১০টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। বৈশাখী দুটি মামলার বাদী, আর একটি করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে শরিফ বেপারীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার পর নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলীকে তাৎক্ষণিকভাবে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
মারধরের শিকার বৈশাখী বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি। তার মাথা ও গলায় আঘাতের কারণে তিনি চিকিৎসাধীন।
তিনি বলেন, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যার নেতৃত্বে আমার ওপর সাগর কাজী ও তার বাবা সেকেন্দার কাজীসহ বিএনপির নেতারা হামলা চালায়।
বৈশাখী বলেন, এ হামলায় যারা অংশ নিয়েছেন তারা এক সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, এখন বিএনপি করে। আমার ওপর হওয়া হামলায় যারা জড়িত তারা সন্ত্রাসী, এদের কোনো দল নেই। আমি দলমতের ঊর্ধ্বে গিয়ে এই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।