সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থানে নদীর পানি বাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। রবিবার (১ জুন) রাত থেকে সোমবার (২ জুন) সকাল পর্যন্ত তিনটি স্থানে বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। 

জকিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামে প্রথমে বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। এরপর সোমবার ভোরে বাখরশাল এবং সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রবল বেগে পানি ঢুকতে থাকে লোকালয়ে। এছাড়াও জকিগঞ্জ পৌর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় নদীর পানি বাঁধ উপচে আবাসিক এলাকায় ঢুকছে। অনেকের বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

এর আগে গতকাল রবিবার বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা বালু ও মাটিভর্তি বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকেও কয়েকটি স্থানে পলিথিন দিয়ে বাঁধ ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়। তবু, শেষরক্ষা হয়নি।

ইউএনও মো. মাহবুবুর রহমান আরো বলেছেন, প্রশাসন সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বন্যাকবলিত মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে কাজ চলছে। এরইমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেছেন, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর বাঁধের কয়েকটি স্থানে গতকাল ফাটল দেখা দেয়। আজ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আমাদের লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। যেখানে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেগুলো যাতে না ভাঙে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা/নূর/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর

চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।

সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।

পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ