গবেষণা প্রকল্পের ভ্যাট-ট্যাক্সের ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত
Published: 2nd, June 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) গবেষণা প্রকল্পের ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ঘটনায় রিসার্চ সেলের কম্পিউটার অপারেটর কাওসার হামিদ চৌধুরীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ সোমবার প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিই) বিভাগের অধ্যাপক আশিকুর রহমানকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফলিত রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলমগীর সরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২–২৩ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে সরকারি ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা ছিল। সম্প্রতি এক সরকারি অডিটে দেখা যায়, সেই অর্থ যথাযথভাবে সরকারি হিসাবে জমা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে দায়িত্বপ্রাপ্ত কম্পিউটার অপারেটর কাওসার হামিদ সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অতিরিক্ত ১৩ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ২৯ মে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাওসার হামিদকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং তাৎক্ষণিক কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। একই সঙ্গে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আটকে রাখা হয় ও তাঁর বাবাকে ডেকে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, পরে অভিযুক্ত কর্মচারীর বাবা ৪৩ লাখ টাকা ২৮ জুনের মধ্যে পরিশোধের অঙ্গীকার করে লিখিত মুচলেকা দেন এবং ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন। তদন্তে যদি পাওনা টাকার পরিমাণ আরও বেশি হয়, তা পরিশোধের প্রতিশ্রুতিও তিনি দেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটিকে ২০২০–২১, ২০২১–২২ ও ২০২২–২৩ অর্থবছরে গবেষণা প্রকল্পের ভ্যাট ও ট্যাক্স যথাযথভাবে জমা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই সময়ে রিসার্চ সেলে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিদের গাফিলতির বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল