গবেষণা প্রকল্পের ভ্যাট-ট্যাক্সের ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত
Published: 2nd, June 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) গবেষণা প্রকল্পের ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ঘটনায় রিসার্চ সেলের কম্পিউটার অপারেটর কাওসার হামিদ চৌধুরীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ সোমবার প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিই) বিভাগের অধ্যাপক আশিকুর রহমানকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফলিত রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলমগীর সরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২–২৩ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে সরকারি ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা ছিল। সম্প্রতি এক সরকারি অডিটে দেখা যায়, সেই অর্থ যথাযথভাবে সরকারি হিসাবে জমা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে দায়িত্বপ্রাপ্ত কম্পিউটার অপারেটর কাওসার হামিদ সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অতিরিক্ত ১৩ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ২৯ মে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাওসার হামিদকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং তাৎক্ষণিক কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। একই সঙ্গে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আটকে রাখা হয় ও তাঁর বাবাকে ডেকে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, পরে অভিযুক্ত কর্মচারীর বাবা ৪৩ লাখ টাকা ২৮ জুনের মধ্যে পরিশোধের অঙ্গীকার করে লিখিত মুচলেকা দেন এবং ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন। তদন্তে যদি পাওনা টাকার পরিমাণ আরও বেশি হয়, তা পরিশোধের প্রতিশ্রুতিও তিনি দেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটিকে ২০২০–২১, ২০২১–২২ ও ২০২২–২৩ অর্থবছরে গবেষণা প্রকল্পের ভ্যাট ও ট্যাক্স যথাযথভাবে জমা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই সময়ে রিসার্চ সেলে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিদের গাফিলতির বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হিরু চক্রকে ২০৮ কোটি অর্থদণ্ড, ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ
বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের হিরু এবং তার সহযোগীদের মোট ২০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ডজন খানেকের বেশি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে হিরু সিন্ডিকেট সদস্যদের জরিমানা করা হয়।
একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে আবুল খায়ের সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, তাই বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অবহিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
গত ১৩ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর ‘পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজি এবং এ সম্পর্কিত বিষয়ে আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদের ওপর আরোপিত অর্থদণ্ড’ প্রসঙ্গে বিএসইসি থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
সমন্বয় বাড়িয়ে আর্থিক বিবরণীর মানোন্নয়নে ৩ সংস্থাকে দিকনির্দেশনা
৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ: স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে বিএসইসির স্পষ্টকরণ
একই সঙ্গে বিষয়টি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর একই বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিল বিএসইসি।
শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আবুল খায়ের, তার পরিবারের সদস্য এবং সহযোগীদের নাম উঠে এলেও কারো বিরুদ্ধে তেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন আবুল খায়ের ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এমনকি, আবুল খায়েরের ব্যবসায়িক পার্টনার বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেও ছাড় দেয়নি বিএসইসি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আবুল খায়ের পুঁজিবাজারে একজন বিনিয়োগকারী। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। বর্তমানে তিনি সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি নিজে এবং তার সহযোগীদের সঙ্গে মিলিতভাবে বিভিন্ন সময়ে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করেছেন। ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুঁজিবাজার উন্নয়নেরও পরিপন্থী। তার এবং তার সহযোগীদের পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজির কারণে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদেরকে বিভিন্ন সময়ে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।
এ বিষয়ে ইতোমধ্যে গত বছরের ৭ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং সমবায় অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ রয়েছে, আবুল খায়ের এককভাবে এবং তার সহযোগীদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজির কারণে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন প্রমাণিত হওয়ায় বিএসইসি আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদেরকে ২০২২ সালের ১৯ জুন থেকে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৫ মে পর্যন্ত সময়ে ১৯৪ কোটি ৬ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। অর্থাৎ আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদেরকে সর্বমোট অর্থদণ্ডের পরিমাণ ২০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আবুল খায়ের একজন সরকারি কর্মচারী। তিনি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। বিষয়টি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হলো।
এদিকে, ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আবুল খায়ের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী। তার পরিচালিত বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট নম্বরগুলো হলো-১২০১৯৫০০৬২১৬৪৫৩৫, ১২০২৬০০০৭১০৯১১১৬, ১২০৪৫৯০০৬৭৭১২৭৮১, ১২০৫৫৯০০৭১০৯১১১৬, ১২০৫৯৫০০৭১০৯১১১৬, ১৬০৪৫৩০০৬২১৬৪৫৩৫ ও ১৬০৫১১০০৭১০৯১১১৬। তিনি সরকারি কর্মচারী, সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক (ইপি) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে করসাজি করেছেন।
২০২২ সালের ১৯ জুন গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান ও তাদের সহযোগীদের ৪২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সময়ে ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান ও তাদের সহযোগীদের ৯৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সময়ে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের দেশ আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভকে ৭২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২২ সালের ৬ জুলাই ফরচুন সুজের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের বাবা আবুল কালাম মাতবর এবং তার সহযোগীদের ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।একই সময়ে এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের বোন কনিকা আফরোজ এবং তার সহযোগীদের ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২২ সালের ২ আগস্ট ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের বাবা আবুল কালাম মাতবর এবং তার সহযোগীদের ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সময়ে বিডিকম অনলাইনের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভ এবং তার সহযোগীদের ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।একই সময়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়েরের প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২৪ সালের ২১ মার্চ জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সে হিসেবে ২০২২ সালে ১৯ জুন থেকে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা জারিমানা করা হয়।
এদিকে, ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবু খায়েরকে ২৫ লাখ টাকা, সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৭৫ লাখ টাকা, আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট লিমিটেডকে ১ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ টাকা, লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে ১ লক্ষ টাকা এবং ব্যবসায়িক পার্টনার মো. জাহেদ কামালকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ফরচুন সুজের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ৭৭ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবু খায়ের হিরুকে ১১ কোটি টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ১৫ কোটি টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২৫ কোটি টাকা, কনিকা আফরোজকে ১৯ কোটি টাকা এবং আবুল খায়েরের ভাই সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ৪৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবু খায়েরকে ১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা টাকা, সাজিদ মাতবরকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, আবুল খায়েরের ভাই মোহাম্মদ বাশারকে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানের ভাই কাজী ফুয়াদ হাসানকে ১ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৮৪ লাখ টাকা এবং আবুল কালাম মাতবরকে ২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১১ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ১ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ১২ লাখ টাকা, আবুল খায়েরের মা আলেয়া বেগমকে ১ লাখ টাকা, আবুল খায়েরের ভাই মোহাম্মদ বাসারকে ১ লাখ টাকা, মোনার্ক হোল্ডিংসকে ১ লাখ টাকা ও সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে ১ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ১ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ১ লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসানকে ৩৫ লাখ টাকা ও কাজী সাদিয়া হাসানের ভাই কাজী ফুয়াদ হাসানকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ করা অভিযোগে আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংসকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ৮ এপ্রিল এশিয়া ইন্সুরেন্সের শেয়ার কারসাজির জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ১৯ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবুল খায়ের হিরুকে ৪ কোটি টাকা টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৫ কোটি টাকা ও কাজী সাদিয়া হাসানকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ৯ এপ্রিল সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ৫২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে ৭৫ লাখ টাকা টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৭৫ লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসানকে ২৫ লাখ টাকা, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ২৫ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ২৫ লাখ টাকা, সাজিদ মাতবরকে ২৫ লাখ টাকা, মোহাম্মদ বাসারকে ২৫ লাখ টাকা, মোনার্ক হোল্ডিংসকে ২৫ লাখ টাকা, মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টকে ২৫ লাখ টাকা, সাকিব আল হাসানকে ২৫ লাখ টাকা ও আবুল খায়েরের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সফটভাসনকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ৯ এপ্রিল সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ২৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হানাসকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসানকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ২৫ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, সাজিদ মাতবরকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, মোহাম্মদ বাসারকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, মোনার্ক হোল্ডিংসকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, সাকিব আল হাসানকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা, ব্যবসায়িক পার্টনার জাভেদ এ মতিনকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা ও সফটভাসনকে ২ কোটি ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৭ মে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি জন্য আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে ৩৭ লাখ টাকা টাকা, ইশাল কমিউনিকেশনকে ৮৫ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ৫৯ লাখ টাকা, আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের প্রতিষ্ঠান মোনার্ক এক্সপ্রেসকে ২২ লাখ টাকা, মোনার্ক মার্টকে ১৫ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১৩ লাখ টাকা, সাকিব আল হাসানকে ৩ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতব্বরকে ৩ লাখ টাকা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজকে ৩ লাখ টাকা, ব্যবসায়িক পার্টনার হুমায়ন কবিরকে ৩ লাখ টাকা ও মো. জাহেদ কামালকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সে হিসেবে ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৭ মে পর্যন্ত আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের ১৯৪ কোটি ৬ লাখ টাকা জারিমানা করা হয়েছে।
আর ২০২২ সালের ১৯ জুন থেকে ২০২৫ সালের ৭ মে পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদের মোট ২০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও পরিচালক আবুল কালাম বলেন, “শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিনিয়োগকারী আবুল খায়েরকে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে। যে কোনো কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে আগামীতে কমিশন আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”
ঢাকা/এনটি/এসবি