চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন হাজারো রোগী
Published: 2nd, June 2025 GMT
রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অচলাবস্থা কোনোভাবেই কাটছে না। সোমবার ষষ্ঠ দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সেবা কার্যক্রম। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো রোগী ফিরে গেছেন চিকিৎসা না পেয়ে।
চলমান অচলাবস্থার মধ্যে গতকাল হাসপাতাল পরিদর্শনে গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। তারা চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে গত ২৯ মে গঠিত কমিটিকে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারেনি।
আজ সকালে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে দেখা মেলে মিরপুর থেকে আসা ৬০ বছরের পুষ্পা রানীর। চোখের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে মেয়ের হাত ধরে এসেছেন তিনি। কিন্তু হাসপাতাল বন্ধ থাকায় ভেতরে ঢুকতে পারেননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাবা আমি চোখের ব্যথা সহ্য করতে পারছি না। তারা আমাকে ঢুকতে দিচ্ছে না।’ পরে ব্যর্থ হয়ে চলে যেতে হয় তাকে।
ঢাকা মেডিকেল থেকে রেফার হয়ে আসা মাকসুদা বেগমও জানতেন না হাসপাতাল বন্ধ। দু’দিন ধরে তিনিও ফিরে যাচ্ছেন। টঙ্গী থেকে আসা রোগী সারওয়ার আহমেদ বললেন, ‘এখানে অপারেশন করিয়েছি। এখন ফলোআপ দরকার। কিন্তু বন্ধ থাকায় অন্য হাসপাতালে গেলে বলে, দেশের সেরা হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে এখন আমাদের কাছে কেন আসলেন?’
হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিদিন হাজারো রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে দুঃখ প্রকাশ করে দায়িত্ব শেষ করেছে এবং অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
অবিলম্বে সেবা চালুর দাবি জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল অবিলম্বে চালুর দাবি জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদ। আজ এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক ফয়জুল হাকিম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিম উচ্ছেদ হলেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে দুর্নীতিবাজ ডাক্তার, কর্মচারী ও নার্সদের সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়। এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সংঘটিত হামলার তদন্তে পৃথক কমিটি গঠন করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।’
চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধাদের দুর্ব্যবহার, হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে ২৮ মে কর্মবিরতি পালন করেন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা। কর্মসূচি চলাকালে অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে চিকিৎসক, কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পর সবাই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। পরদিন থেকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচন সামনে রেখে ৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাদে অন্য কোনো নির্বাচনে নিউইয়র্কে এটাই সর্বোচ্চ আগাম ভোট পড়ার ঘটনা। আগামীকাল ৪ নভেম্বর নিউইয়র্ক নগরে মেয়র পদে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে।
গতকাল রোববার ছিল আগাম ভোট দেওয়ার শেষ দিন। এদিন প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। নগরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, আগাম ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ ভোট পড়ার ঘটনা। তা ছাড়া এদিন ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি ছিল। এর মধ্য দিয়ে আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের গড় বয়সও কমে এসেছে। গড় বয়স ৫০ বছরে নেমে এসেছে।
আগের সপ্তাহের প্রথম দিকে কম বয়সী ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল। ওই সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮০ হাজার নিউইয়র্কবাসী ভোট দিয়েছিলেন। তবে গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত এই সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৩৫ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গতকাল রোববারই এ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজারের বেশি।
আরও পড়ুনমামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা০২ নভেম্বর ২০২৫নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।
নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।নিউইয়র্কে সর্বপ্রথম মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয় ২০২১ সালে। ওই নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যায়নি। ওই নির্বাচনে এরিক অ্যাডামস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্লিওয়াকে দ্বিগুণের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন।
অবশ্য চলতি বছর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের সংখ্যা গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম ভোটকে ছাড়াতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০ লাখ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের বয়স তুলনামূলক কম। এটা অবাক করা বিষয়। কারণ, সাধারণত যারা আগাম ভোট দেন তাঁদের গড় বয়স মোট নিবন্ধিতদের গড় বয়সের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।
চলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের গড় বয়স ছিল ৫১ বছর। তবে এবার মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটারদের গড় বয়স আরও কমে ৫০ বছরে নেমেছে।