উল্লাপাড়ায় পশুর হাটে ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল (কর) আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করছে। তারা চলে গেলে ফের শুরু হয় অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কর্মযজ্ঞ। তবে রসিদ দেওয়া হচ্ছে না ক্রেতাকে।
প্রশাসন অনুমোদিত হাটবাজারের হাসিল আদায়ের তালিকা অনুযায়ী, একটি গরুর জন্য ৪০০ ও একটি ছাগলের জন্য ৬০ টাকা আদায় করা যাবে। হাটবাজার ইজারাদার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন হাটে ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি গরু থেকে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকাও আদায় করা হচ্ছে। ছাগল থেকে নেওয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা।
কাশিনাথপুর গ্রামের আবদুল আজিজ রোববার জনতার হাটে যান ষাঁড় কিনতে। তাঁর কাছ থেকে ৬০০ টাকা হাসিল নেওয়া হয়েছে। অথচ গরুপ্রতি হাসিল বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৪০০ টাকা। ইজারাদার অতিরিক্ত টাকা নিলেও রসিদে তা লেখেননি।
গাজীপুর উপজেলার তেলকুপি গ্রাম থেকে বোয়ালিয়া হাটে গরু কিনতে এসেছিলেন আলাউদ্দিন। তিনি একটি ষাঁড় গরু কিনে হাসিল দিয়েছেন ৮০০ টাকা। পাটধারী গ্রামের তানভীর আলমের কাছ থেকে হাসিল নেওয়া হয়েছে এক হাজার টাকা।
গত শনিবার জনতা হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ইজারাদার রুহুল আমিনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। গত রোববার বোয়ালিয়া হাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন বুদ্দুকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়ে জনতা হাটের ইজারাদার রুহুল আমিন বলেন, অনেক টাকা দিয়ে হাট ইজারা নিয়েছেন। গরু বাঁধার স্থান নির্ধারণ, বাঁশের খুঁটি দিয়ে আঁড় তৈরিসহ হাট প্রস্তুত করতেও বেশ টাকা খরচ হয়েছে। তার ওপর বৃষ্টির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি কম হয়। এ কারণে একটু বেশি হাসিল আদায় করেছিলাম।
বোয়ালিয়া হাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন বুদ্দু জানান, হাট ব্যবস্থাপনায় খরচ বেড়েছে। তাই কিছু বাড়তি খাজনা নিয়েছিলেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশের পর সরকার নির্ধারিত মূল্যে হাসিল আদায় করছেন।
ইউএনও আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, হাটে নজরদারি করা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে অভিযান চালিয়ে ইজারাদারদের জরিমানা করা হচ্ছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অভিযান চলবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইজ র র ইজ র দ র
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল