ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলামের (১৮) ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির এক নেতার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত একজন। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে সাগর কাজী নামের ওই ব্যক্তি এ অভিযোগ করেন।

বৈশাখীর অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকেলে তাঁকে চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ইসকান্দার কাজী, তাঁর ছেলে সাগর কাজী, ফয়সালসহ আরও কয়েকজন।

তবে সাগর কাজী ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করেন, ‘সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে এখানে রাজনীতি করছেন বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান। তিনি এটি রাজনৈতিক ইস্যু করে ফেলছেন।’ হামলার দিন ঘটনাস্থলে ওই বিএনপি নেতা নিজেও উপস্থিত ছিলেন বলে তাঁর দাবি।

আরও পড়ুনফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী সংগঠককে মারধর, দোষীদের আটক করতে এসে পুলিশ হামলার শিকার৩১ মে ২০২৫

নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বদিউজ্জামান ওরফে তারা মোল্লার প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে সাগর কাজী বলেন, ‘যখন আপনার সঙ্গে ব্যানার করলাম তখন চিনলেন, বিপদে পড়ছি এখন চেনেন না। আমার ওপরে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন কেন?’
সাগর কাজীর ভাষ্য, ‘বদিউজ্জামান বলেছেন, বিএনপির কোনো লোক সেদিন ওখানে ছিল না। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে, ওখানে যাঁরা ছিলেন তাঁরা বিএনপির সমর্থক, এমনকি বদিউজ্জামানের ভাই দুদু মোল্লাও ঘটনাস্থলে ছিলেন।’

অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন হামলায় অভিযুক্ত সাগর কাজী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ