গাজীপুরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যায় জড়িত ও প্ররোচনার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শাজাহান খানসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এর আগে কালিয়াকৈর থানায় আরও পাঁচটি মামলা করা হয়েছিল।

গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে গাজীপুরের সফিপুর আনসার একাডেমির ৩ নম্বর গেটের সামনে ছাত্র ও জনতার একটি মিছিল হয়। ওই মিছিলে গুলিবর্ষণ ও লাঠিপেটার মাধ্যমে দুজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার নারাচাতল গ্রামের মো.

রোস্তম মিয়া (৪৬)। অপরজন হলেন বগুড়া সদর থানার কুটুরবাড়ী মধ্যপাড়া এলাকার মজনু প্রামাণিকের ছেলে মো. মাহফুজ (৩৫)।

রোস্তম মিয়ার স্ত্রী শেফালী বেগম গত সোমবার কালিয়াকৈর থানায় মামলা করেন। মাহফুজের ভাই আপেল মাহমুদ আদালতের শরণাপন্ন হলে ৩০ মে গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থানায় মামলাটি করার নির্দেশ দেন।

মাহফুজের পরিবারের দাবি, তিনি ইন্টার সফট লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন। ওই দিন বিকেলে কাজ শেষে তিনি ছাত্র–জনতার মিছিলে যোগ দেন এবং সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

রোস্তম মিয়ার পরিবারের অভিযোগ, তিনি আহাম্মদনগর এলাকায় একটি বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনিও মিছিলে যোগ দিয়ে সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হন।

মাহফুজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সরকার মোশারফ হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর আলী। মামলায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

রোস্তম মিয়া হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আ ক ম মোজাম্মেল হককে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ কবির, মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা। এতে ৩১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।

কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, আদালতের নির্দেশে দুটি মামলা করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স তম ম য় মন ত র উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত

মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির। 

আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ