নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় পরিত্যক্ত পুকুরের পানিতে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার চাঁচূড়ি ইউনিয়নে আটলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া ওই দুই শিশুর নাম রাহাত শেখ (৩) ও রিহান শেখ (৩)। তারা সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই।

রাহাত কালিয়া উপজেলার আটলিয়া গ্রামের রনি শেখের ছেলে। রিহানের বাবার নাম রিয়াজ শেখ।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে বাড়ির লোকজন যার যার কাজ করছিলেন। উঠানে খেলেছিলেন শিশু রাহাত ও রিহান। কিছু সময় পর পরিবারের লোকজন দেখেন, তারা উঠানে নেই। এরপর আশপাশে তাদের খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে উঠানের পাশের পরিত্যক্ত একটি পুকুর থেকে অচেতন অবস্থায় ওই দুই শিশুকে পাওয়া যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে নড়াইল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।

মারা যাওয়া দুই শিশুর চাচা হৃদয় শেখ বলেন, ‘ওরা দুজনই সমবয়সী ছিল। একসঙ্গে খেলাধুলা করত। আজ সকালেও উঠানে খেলাধুলা করছিল। বাড়ির অন্য সবাই কাজ করছিল। খেলাধুলা করতে করতে কোন এক সময় ওরা পাশের পুকুরে পড়ে গিয়েছিল। পরে আমরা খোঁজাখুঁজি করে পুকুর থেকে তাদের পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যায়।’

চাঁচূড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (৪, ৫ ও ৬ নম্বর) নারী সদস্য মেরিনা বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে শিশু দুটি মারা গেছে, তারা আমার ভাতিজাদের সন্তান। খেলাধুলা করতে করতে পানিতে পড়ে ওরা মারা গেছে। তাদের দাফনের প্রস্তুতি চলছে।’

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুকুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ