ঈদুল আজহার আর মাত্র দুই দিন বাকি। কিন্তু কুমিল্লায় হাট কাঁপানো দুটি টাইগার ও দুটি কালা মানিক নামে বড় গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন। হাটে ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম বাড়লেও গত তিন দিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে চাহিদামতো দাম না পাওয়ায় গরু চারটি বিক্রি করা যায়নি।

বাজারে ও বাড়িতে গরু চারটি দেখতে দর্শনার্থীর ভিড় থাকলেও ক্রেতা মিলছে না। জয়নালের ভাষ্য, অনেকেই গরুর সঙ্গে সেলফি তুলে চলে যান।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লা শহরতলির চাঁনপুর-গাউছিয়া গরুর হাটে দেখা মেলে কালা মানিক ও টাইগারের। গরু চারটি নিয়ে আসা জয়নাল আবেদীন কুমিল্লা সদর উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা।

বাজারে প্রবেশের সময় বাজার কমিটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মাইকে বারবার ঘোষণা করা হচ্ছিল, এবার বাজারে চলে এসেছে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও কালা মানিক। টাইগার ও কালা মানিক দেখতে হলে বাজারে আসতে হবে। বাজারের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, টাইগার ও কালা মানিকের গলায় লাল মালা পরিয়ে হাটে তুলেছেন বিক্রেতা। তাদের ঘিরে রেখেছে উৎসক মানুষ। কেউ কেউ গরুর সঙ্গে সেলফি তুলছেন। 

জয়নাল আবেদীন বলেন, টাইগার দুটির ওজন ২৮ মণ করে। গায়ের রং খয়েরি লাল। এরা একটি লম্বায় ৮ ফুট ও উচ্চতা ৬ ফুট আর কালা মানিকের ওজন ২০ মণ করে, গায়ের রং কালো। এদের উচ্চতা ৭ ফুট ও লম্বায় ৬ ফুট। টাইগার দুটির দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ১৪ লাখ আর কালা মানিক দুটির দাম ১২ লাখ। তবে ক্রেতারা পছন্দ করলে দরদাম করে কিছুটা কমানো যাবে।

জয়নাল আবেদীন জানান, এই চারটি গরু তাঁর বাড়িতে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে দুই বছর ধরে লালন-পালন করা হয়েছে। প্রতিদিন গোসল করানো হয় এবং তার খাবারে থাকে ময়দা, ভুসি, দানাগুড়, গম, কালাইসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য।

এদিকে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গরুর মালিক জয়নাল মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, ‘ক্রেতারা দুটি টাইগার ১০ লাখ এবং দুটি কালা মানিকের দাম ৯ লাখ বলেছেন। এ দামে বিক্রি করলে বড় লোকসান হবে। তাই আরও দুই দিন দেখব।’

বাজারের ইজারাদার তোফায়েল আহমেদ জানান, বাজারের সবচেয়ে আকর্ষণ হচ্ছে চারটি টাইগার ও কালা মানিক গরু। এদের দেখতে মানুষ সকাল থেকে বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন। দুপুর পর্যন্ত অনেকেই দাম জেনেছেন; কিন্তু কেউ কিনতে সাহস করেননি। তিনি বলেন, এই বাজার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায়। এই বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। বেচাকেনা ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত চলবে। বগুড়া, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে গরু এনেছেন ব্যবসায়ীরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় গর

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসবির বাশার প্রতারণার আরও ৯ মামলায় গ্রেপ্তার

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’-এর চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারকে আরও নয়টি প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এই আদেশ দেন।

ঢাকার সিএমএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১০ দিনের রিমান্ড শেষে খায়রুল বাশারকে আজ বুধবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। প্রতারণার পৃথক নয়টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় ১৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খায়রুল বাশার তাঁর স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, মনগড়া প্রতিনিধিত্ব ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হতো। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকের নামে বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করা হয়নি। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা করেছেন।

আরও পড়ুনউচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ, বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বাশার গ্রেপ্তার১৪ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ