‘টাইগার’ ও ‘কালা মানিক’ নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ী
Published: 4th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার আর মাত্র দুই দিন বাকি। কিন্তু কুমিল্লায় হাট কাঁপানো দুটি টাইগার ও দুটি কালা মানিক নামে বড় গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন। হাটে ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম বাড়লেও গত তিন দিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে চাহিদামতো দাম না পাওয়ায় গরু চারটি বিক্রি করা যায়নি।
বাজারে ও বাড়িতে গরু চারটি দেখতে দর্শনার্থীর ভিড় থাকলেও ক্রেতা মিলছে না। জয়নালের ভাষ্য, অনেকেই গরুর সঙ্গে সেলফি তুলে চলে যান।
বুধবার বিকেলে কুমিল্লা শহরতলির চাঁনপুর-গাউছিয়া গরুর হাটে দেখা মেলে কালা মানিক ও টাইগারের। গরু চারটি নিয়ে আসা জয়নাল আবেদীন কুমিল্লা সদর উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা।
বাজারে প্রবেশের সময় বাজার কমিটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মাইকে বারবার ঘোষণা করা হচ্ছিল, এবার বাজারে চলে এসেছে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও কালা মানিক। টাইগার ও কালা মানিক দেখতে হলে বাজারে আসতে হবে। বাজারের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, টাইগার ও কালা মানিকের গলায় লাল মালা পরিয়ে হাটে তুলেছেন বিক্রেতা। তাদের ঘিরে রেখেছে উৎসক মানুষ। কেউ কেউ গরুর সঙ্গে সেলফি তুলছেন।
জয়নাল আবেদীন বলেন, টাইগার দুটির ওজন ২৮ মণ করে। গায়ের রং খয়েরি লাল। এরা একটি লম্বায় ৮ ফুট ও উচ্চতা ৬ ফুট আর কালা মানিকের ওজন ২০ মণ করে, গায়ের রং কালো। এদের উচ্চতা ৭ ফুট ও লম্বায় ৬ ফুট। টাইগার দুটির দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ১৪ লাখ আর কালা মানিক দুটির দাম ১২ লাখ। তবে ক্রেতারা পছন্দ করলে দরদাম করে কিছুটা কমানো যাবে।
জয়নাল আবেদীন জানান, এই চারটি গরু তাঁর বাড়িতে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে দুই বছর ধরে লালন-পালন করা হয়েছে। প্রতিদিন গোসল করানো হয় এবং তার খাবারে থাকে ময়দা, ভুসি, দানাগুড়, গম, কালাইসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য।
এদিকে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গরুর মালিক জয়নাল মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, ‘ক্রেতারা দুটি টাইগার ১০ লাখ এবং দুটি কালা মানিকের দাম ৯ লাখ বলেছেন। এ দামে বিক্রি করলে বড় লোকসান হবে। তাই আরও দুই দিন দেখব।’
বাজারের ইজারাদার তোফায়েল আহমেদ জানান, বাজারের সবচেয়ে আকর্ষণ হচ্ছে চারটি টাইগার ও কালা মানিক গরু। এদের দেখতে মানুষ সকাল থেকে বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন। দুপুর পর্যন্ত অনেকেই দাম জেনেছেন; কিন্তু কেউ কিনতে সাহস করেননি। তিনি বলেন, এই বাজার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায়। এই বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। বেচাকেনা ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত চলবে। বগুড়া, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে গরু এনেছেন ব্যবসায়ীরা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।