গত ১৫ মার্চ ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরএসসি) ১৫ চিকিৎসক ও উদ্ধারকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার একটি লোমহর্ষক বর্ণনা প্রকাশ করেছে পিআরএসসি। হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন সংস্থাটির চিকিৎসক আসাদ আল-নাসাসরা। তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর হাত থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আটক হন। মুক্তি পেয়ে নৃশংস হামলার বর্ণনা দিয়েছেন আসাদ। 

৪৭ বছর বয়সী আসাদ জানান, ‘আমিসহ দুজন ইসরায়েলি সেনাদের গুলি থেকে প্রাণে বেঁচে যাই। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ওই দিন একটি গাড়িবহরে হামলা করে ১৫ জনকে হত্যা করেছিল। আমাকে আটক করে ৩৭ দিন ধরে নির্যাতন করা হয়েছিল।’

পরে একটি গণকবরে ওই ১৫ জনের মৃতদেহ শনাক্ত করেন উদ্ধারকর্মীরা। অনেকের শরীরে তখনও পোশাক ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাত বাঁধা ছিল। তবে ইসরায়েলি বাহিনী প্রথম দিকে এই হত্যাকাণ্ড অস্বীকার করে। আসাদের সঙ্গী রাদওয়ান ওই হামলায় নিহত হন। রাদওয়ানের ফোনে হামলার ভিডিও রেকর্ড হয়ে যায়। সাত মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ওই রাতে অ্যাম্বুলেন্সগুলো জরুরি সংকেত হিসেবে লাল আলো জ্বালিয়ে চলছিল।

তবে ইসরায়েলি বাহিনী সংকেত উপেক্ষা করে গুলি করতে থাকে। আসাদ এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে মাটিতে লুকিয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর সহকর্মী মোহাম্মদ আল হাইলা গুলিবিদ্ধ হন। শেষ মুহূর্তে তিনি আসাদকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন।

আসাদ বলেন, ‘গোলাগুলির প্রচণ্ড শব্দ কানে আসছিল। ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যরা খুব কাছ থেকেই গুলি চালাচ্ছিল। তারা জীবিত সবাইকে হত্যা করছিল। আমি জীবিত আছি টের পেয়ে মাথায় বন্দুক তাক করে এক সেনা। আমি তাদের বলি, আমাকে হত্যা করো না, আমার মা একজন ফিলিস্তিনি ইহুদি। আমি ইসরায়েলি।’ খবর দ্য গার্ডিয়ানের। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ