ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু দিয়ে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে অন্তত ২২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে আশেরপুর বাইপাস থেকে যমুনা সেতুর পুর্বপ্রান্ত পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঈদে ঘরমুখো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও বাসের ছাদে করে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করতে যাচ্ছে যাত্রীরা। তিন ঘন্টার রাস্তায় সময় লাগছে ৬-৮ ঘণ্টা করে।

গাবতলি বাস টার্মিনাল থেকে রাত আটটার সময় খোলা ট্রাকে চেপে রংপুর যাচ্ছেন হাসেম মিয়া। সকাল সাড়ে ১০টার সময় টাঙ্গাইল শহরবাইপাস দরুন এলাকায় এসে পৌছেছেন। তিনঘন্টার রাস্তায় আসতে তার সময় লেগেছে প্রায় ১৪ ঘন্টা। যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী । সব থেকে বিপাকে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। গাড়িতে বসে থেকে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

রংপুরগামী এস আর গাড়ির চালক আব্দুল মোমেন বলেন, ১০ বছরের মধ্যে এরকম যানজটে পরিনি। ঈদের পড়ে অফিস আদালত বেশিদিন বন্ধ দেওয়ায় লোকজন বেশি বেশি বাড়ি যাচ্ছে। এছাড়াও রাস্তা না হওয়ার কারনেও যানজট হয়েছে। ৭ ঘন্টার রাস্তায় ২০/২২ ঘন্টা লেগে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরির্দশক দোলোয়ার হোসেন বলেন, লক্কর ঝক্কর ও ফিটনেস বিহীন যানবাহনগুলো মাঝে মধ্যেই মহাসড়কের উপর বিকল হয়ে পড়ছে। স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৪ গুন যানবাহন চলাচল করছে ফলে একটার পেছনে আরেকটা গাড়ি লেগেই রয়েছে। একটা গাড়ি একটু ব্রেক করলেই পেছনে দুই তিন কিলোমিটার যানজট লেগে যাচ্ছে। যমুনা সেতু দিয়ে সিরাজগঞ্জ অংশে গাড়িগুলো ঠিক মতো পাস হতে পারছে না। যার কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও টাঙ্গাইল শহর বাইপাস রাবনা ঘারিন্দা ও এলেঙ্গা, যমুনাসেতুর উপর  কয়েকটি ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার কারণেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে একেবারে যানজট হয়নি। থেমে থেমে যানবাহন চলছে। যানজট নিরসন আমরা নিরসলভাবে কাজ করছি।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ঈদযাত্রায় ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের ৬৪ হাজার ২৮৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ৯৫০ টাকা।

গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বলেন, ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর দুই পাশে ৯টি করে মোট ১৮ বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এর মধ্যে দুইপাশেই ২টি করে বুথ দিয়ে আলাদাভাবে মোটরসাইকেলের জন্য পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়ির অতিরিক্ত চাপ এছাড়াও ব্রীজের উপর গাড়ি দাড়িয়ে ধাকার কারণে  মাঝে মধ্যে টোল আদায় বন্ধ রাখা হচ্ছে। ফলে যানজট তৈরী হচ্ছে। তবে একেবাওে যানজট নেই । থেমে থেমে যানবাহন চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য নজট য নজট র

এছাড়াও পড়ুন:

যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের কতিপয় বিপথগামী বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিকেলে অনুষদীয় চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা করেন।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাহা’র নেতৃবৃন্দ ও অনুষদের ডিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ তুলে মতামত দেন।

আরো পড়ুন:

গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫

ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়

আলোচনা সভা শেষে বাহা ও ওই অনুষদ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই কার্যক্রমে অনুষদের সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন ও হেয় করতে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপচেষ্টায় লিপ্ত।

বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয় এবং প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের সমাবেশে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী বলেন, “আমরা পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন লেভেলের কয়েক’শ গত ১ সপ্তাহ ধরে আমাদের যৌক্তিক দাবি কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদগামী বলে সম্বোধন করছেন, তাদের আমরা এ অনুষদ চত্বর থেকে লালকার্ড দেখাই। কোনো বিবৃতি বা হুমকি দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না।”

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “বাকৃবিতে চলমান যৌক্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাহা’র মহাসচিব ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও, তার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপথগামী বলা হয়। এছাড়া আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর আন্দোলন হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা মিথ্যা, অপমানজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ