ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ২২ কিলোমিটার যানজট
Published: 6th, June 2025 GMT
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু দিয়ে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে অন্তত ২২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে আশেরপুর বাইপাস থেকে যমুনা সেতুর পুর্বপ্রান্ত পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঈদে ঘরমুখো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও বাসের ছাদে করে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করতে যাচ্ছে যাত্রীরা। তিন ঘন্টার রাস্তায় সময় লাগছে ৬-৮ ঘণ্টা করে।
গাবতলি বাস টার্মিনাল থেকে রাত আটটার সময় খোলা ট্রাকে চেপে রংপুর যাচ্ছেন হাসেম মিয়া। সকাল সাড়ে ১০টার সময় টাঙ্গাইল শহরবাইপাস দরুন এলাকায় এসে পৌছেছেন। তিনঘন্টার রাস্তায় আসতে তার সময় লেগেছে প্রায় ১৪ ঘন্টা। যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী । সব থেকে বিপাকে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। গাড়িতে বসে থেকে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
রংপুরগামী এস আর গাড়ির চালক আব্দুল মোমেন বলেন, ১০ বছরের মধ্যে এরকম যানজটে পরিনি। ঈদের পড়ে অফিস আদালত বেশিদিন বন্ধ দেওয়ায় লোকজন বেশি বেশি বাড়ি যাচ্ছে। এছাড়াও রাস্তা না হওয়ার কারনেও যানজট হয়েছে। ৭ ঘন্টার রাস্তায় ২০/২২ ঘন্টা লেগে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরির্দশক দোলোয়ার হোসেন বলেন, লক্কর ঝক্কর ও ফিটনেস বিহীন যানবাহনগুলো মাঝে মধ্যেই মহাসড়কের উপর বিকল হয়ে পড়ছে। স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৪ গুন যানবাহন চলাচল করছে ফলে একটার পেছনে আরেকটা গাড়ি লেগেই রয়েছে। একটা গাড়ি একটু ব্রেক করলেই পেছনে দুই তিন কিলোমিটার যানজট লেগে যাচ্ছে। যমুনা সেতু দিয়ে সিরাজগঞ্জ অংশে গাড়িগুলো ঠিক মতো পাস হতে পারছে না। যার কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও টাঙ্গাইল শহর বাইপাস রাবনা ঘারিন্দা ও এলেঙ্গা, যমুনাসেতুর উপর কয়েকটি ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার কারণেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে একেবারে যানজট হয়নি। থেমে থেমে যানবাহন চলছে। যানজট নিরসন আমরা নিরসলভাবে কাজ করছি।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ঈদযাত্রায় ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের ৬৪ হাজার ২৮৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ৯৫০ টাকা।
গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বলেন, ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর দুই পাশে ৯টি করে মোট ১৮ বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এর মধ্যে দুইপাশেই ২টি করে বুথ দিয়ে আলাদাভাবে মোটরসাইকেলের জন্য পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়ির অতিরিক্ত চাপ এছাড়াও ব্রীজের উপর গাড়ি দাড়িয়ে ধাকার কারণে মাঝে মধ্যে টোল আদায় বন্ধ রাখা হচ্ছে। ফলে যানজট তৈরী হচ্ছে। তবে একেবাওে যানজট নেই । থেমে থেমে যানবাহন চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল