নির্বাচনের সময় ঘোষণা করায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন
Published: 6th, June 2025 GMT
নির্বাচনের সময় ঘোষণা করায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আজকে এপ্রিল, ২৬–এর প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করে সেই অস্থিরতা প্রশমিত করায় তাঁকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বন্দর, মানবিক করিডোর নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে উদ্বেগ দূর করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন মুফতি রেজাউল করীম।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারই ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান লক্ষ্য এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কর্তব্য। সেই সংস্কারকাজের যে অগ্রগতির বিবরণ তিনি তুলে ধরেছেন, তাতে আমরা আশান্বিত হয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করি তিনি ও তাঁর সরকার সব বাধা উপেক্ষা করে সংস্কারের কাজ শেষ করবেন। বিচারের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতির বিবরণ দিয়েছেন, তা জাতিকে আশ্বস্ত করেছে।’
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, কোরবানির চামড়া যা মূলত গরিবদের হক, তা নিয়ে বিগত সরকার সীমাহীন জালিয়াতি করেছে। সরকার এই ক্ষেত্রে ইতিবাচক যেসব উদ্যোগ নিয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তা আশাব্যঞ্জক। একই সঙ্গে হজ নিয়ে গৃহীত পদক্ষেপের সুফল জাতি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এই সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সাধুবাদযোগ্য। অর্থনীতির সংস্কার এবং দেশকে সঠিক ধারায় উত্তরণে এই সরকারের যে প্রচেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা তুলে ধরেছেন, তার প্রশংসা করতেই হবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, দেশ যুদ্ধাবস্থায় আছে। নানামুখী চক্রান্ত ও অপপ্রচার দেশকে আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরছে। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা দেশের স্বার্থেই আবশ্যক। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার কুয়াশা রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিল, তা আজকে কেটে গেছে। ফলে সংস্কার ও বিচারের কাজে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার যে আহ্বান তিনি করেছেন, তাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরাবরের মতো সাড়া দেবে।
এর আগে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক