বিমানযাত্রায় ছোট স্যুটকেসের চাহিদা কেন বাড়ছে
Published: 7th, June 2025 GMT
বিমানে চেক-ইন লাগেজের জন্য নতুন করে মাশুল বা ফি নির্ধারণ করেছে এয়ার কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনস। এমন অতিরিক্ত ফি নিয়ে বিমানের যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ছোট স্যুটকেস বা ব্যাকপ্যাকের চাহিদা। কারণ, এগুলো সহজেই কেবিনে বহন করা যায়, ফলে বাড়তি মাশুল গুনতে হয় না। খবর বিবিসির
চেক-ইন লাগেজ ফির নামে বিমানে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া এমন অতিরিক্ত চার্জ ‘জাঙ্ক ফি’ নামেও পরিচিত। বিশেষ করে বাজেট বিমান সংস্থাগুলো এমন চার্জ বেশি নিয়ে থাকে।
কানাডার ডাউন টাউন বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লরেন আলেক্সান্ডার বিবিসিকে বলেন, ‘এই চার্জগুলো একদমই অযৌক্তিক। মনে হয় একধরনের প্রতারণা। আপনি মনে করেন, কম দামে টিকিট কিনলেন, কিন্তু পরে লাগেজ নেওয়ার জন্য আলাদাভাবে ২০০ ডলার দিতে হচ্ছে।’ অতিরিক্ত মাশুল এড়াতে লরেন কেবল একটি ছোট ব্যাকপ্যাক নিয়ে এসেছেন।
একসময় বিমানে আসন বাছাই, খাবার ও লাগেজ—সবই ছিল বিনা মূল্যে। তবে বাজেট এয়ারলাইনগুলোর উত্থানের পর চিত্র পাল্টে যায়। বাজেট এয়ারলাইন হচ্ছে লো-কস্ট ক্যারিয়ার, যা যাত্রীদের তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভ্রমণের সুযোগ দেয়। মূলত বাজেট এয়ারলাইনের টিকিটের দাম সাধারণ এয়ারলাইনের তুলনায় অনেক কম থাকে। তবে খাবার, পানীয়, লাগেজ বহন ইত্যাদির জন্য তারা আলাদা মাশুল নিতে পারে।
২০০৬ সালে যুক্তরাজ্যের ফ্লাইবি ছিল প্রথম এয়ারলাইন, যারা লাগেজ চেক-ইনের জন্য ২ পাউন্ড মাশুল আদায় শুরু করে। পরে অন্যান্য বাজেট এয়ারলাইন সেই পথ অনুসরণ করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু নামীদামি বিমান সংস্থাও সেই পথে হাঁটে।
২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বিমান সংস্থা হিসেবে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রথম ব্যাগের জন্য ১৫ ডলার ফি নেওয়া শুরু করে আমেরিকান এয়ারলাইনস। পরে অন্যরাও সেটি আদায় শুরু করে। গত বছর শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সংস্থাগুলো লাগেজ ফি থেকে আয় করেছে ৭২৭ কোটি মার্কিন ডলার।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকে এখন কেবল কেবিন ব্যাগ বহনের চেষ্টা করছেন। যুক্তরাজ্যের ব্যাগ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যান্টলারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কির্সটি গ্লেন বলেন, ‘ছোট স্যুটকেসের চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া। আমরা গত মাসে একটি নতুন নকশার ছোট ব্যাগ বাজারে এনেছিলাম, যেটি বিক্রি হয়ে গেছে বিপুল পরিমাণে।’
অন্যদিকে কিছু ইউরোপিয়ান এয়ারলাইনস এখন হাতব্যাগের জন্যও অতিরিক্ত মাশুল আদায় করছে। রায়ানএয়ার, ইজি জেট, ভুয়েলিং, উইজএয়ার প্রভৃতি বিমান সংস্থা তার মধ্যে অন্যতম। এই নিয়মের বিরুদ্ধে গত মাসে ইউরোপীয় কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে ইউরোপিয়ান কনজিউমার অর্গানাইজেশন (বিইইউসি)।
অবশ্য এই নিয়মের ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন ভারতের ইন্ডিগো এয়ারলাইন চেক-ইন লাগেজের জন্য কোনো ফি নেয় না। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) পিটার আইবার্স বলেন, ‘আমরা লাগেজ নিয়ে বিতর্ক চাই না। এ কারণে আমাদের প্লেনগুলো মাত্র ৩৫ মিনিটে উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।’
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর বিশ্বজুড়ে বিমানে অতিরিক্ত ফি বাবদ বিমান সংস্থাগুলোর আয় দাঁড়াবে ১৪৫ বিলিয়ন ডলার। এটি পুরো এভিয়েশন খাতের মোট আয়ের ১৪ শতাংশ। গত বছর এই অতিরিক্ত মাশুলের পরিমাণ ছিল ১৩৭ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থের মধ্যে রয়েছে লাগেজ ফি, ওয়াই-ফাই সুবিধা, লাউঞ্জ ব্যবহার, খাবার প্রভৃতি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর র জন য চ ক ইন
এছাড়াও পড়ুন:
মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শেষ। তিনি আর সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চান না।
শনিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এ কথা বলেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে কী না? জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি তা–ই ধরেই নিচ্ছি।’
মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চান কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ‘না’ বলে দেন। এই মন্তব্য সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে মাস্কের সঙ্গে তাঁর প্রকাশ্য বিরোধের সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ।
আরও পড়ুনট্রাম্প ও মাস্কের মধুর সম্পর্কে বিচ্ছেদ কেন, কী হবে এবার ০৬ জুন ২০২৫টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও মাস্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারে কোটি ডলার অনুদান দিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলের কঠোর সমালোচনা করেন।
সম্প্রতি ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলকে ‘জঘন্য’ বলে কটাক্ষ করেন মাস্ক। তাঁর ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখুন, ইলনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। জানি না সেটা আর থাকবে কি না।’
মাস্ককে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভীষণ হতাশ। কারণ, এখানে উপস্থিত অন্য যে কারও চেয়ে তিনি এ বিলের ভেতরের খুঁটিনাটি সম্পর্কে ভালো জানতেন। হঠাৎই এটি নিয়ে তাঁর সমস্যা শুরু হয়েছে।’ তবে ট্রাম্পের এ দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মাস্ক।
আরও পড়ুনইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের০৬ জুন ২০২৫ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মাস্ক একাধিক পোস্ট দিয়েছেন। এসব পোস্টে ট্রাম্পকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। প্রমাণ না দিলেও মাস্ক দাবি করেছেন, ট্রাম্প ‘এপস্টেইন ফাইল’–এ আছেন।
শনিবার এনবিসির সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, মাস্ক প্রেসিডেন্টের অফিসের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করেছেন।