বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী মারা গেছেন
Published: 8th, June 2025 GMT
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নাসরিন সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এর আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাসরিন সিদ্দিকীর প্রথম জানাজা রোববার বাদ জোহর টাঙ্গাইলের পিটিআই স্কুল মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে কালিহাতির ছাতীহাটিতে নিজ বাড়িতে বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিজ এলাকায় দাফন সম্পন্ন হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কমলগঞ্জের নারীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিন
শহরে-গ্রামে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন কর্মজীবী নারীরা। কেউ চাকরি করে, কেউ নিজে কোনো উদ্যোগ নিয়ে। এমন অনেক গ্রাম আছে যেখানে বংশপরম্পরায় নানা ধরনের হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকেন নারীরা। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই বছরের পর বছর সে কাজ করে যান তাঁরা। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার টিলাগাঁও তেমনই একটি গ্রাম। ছোট এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির উঠান যেন একেকটি কুটিরশিল্পের কর্মশালা। নারীরা এখানে বংশপরম্পরায় বাঁশ-বেতের চাটাই বুনে জীবন ধারণ করেন। একদিকে ঐতিহ্য, অন্যদিকে দারিদ্র্যের বাস্তবতা—এ দুইয়ের টানাপোড়েনে এখনো টিকে আছে এই হস্তশিল্প। কিন্তু টিকে থাকাটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চাটাই বোনার কাজ গ্রামীণ নারীদের জন্য শুধু আয়ের উৎস নয়, এটি তাঁদের আত্মমর্যাদার প্রতীকও। মরিয়ম বিবির মতো অনেকেই স্বামী হারানোর পর সন্তানদের মানুষ করতে এই কাজ আঁকড়ে ধরেছেন। কিন্তু পুঁজির সংকট, কাঁচামালের অপ্রাপ্যতা ও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন মহাজনের দয়ায় চলতে। এতে শ্রমের ন্যায্যমূল্য তো পাচ্ছেনই না, বরং একধরনের ঋণচক্রে আটকে পড়ছেন।
এই নারীরা কোনো করপোরেট অর্থনীতির সুবিধাভোগী নন। তাঁরা সরকারের প্রণোদনা বা এনজিও ঋণের আওতার বাইরেই থেকে গেছেন। অথচ তাঁরা দেশীয় শিল্পের ধারক। তাঁদের তৈরি চাটাই শুধু গ্রামীণ সৌন্দর্য নয়, এটি টেকসই, পরিবেশবান্ধব এবং আমাদের লোকসংস্কৃতির অমূল্য নিদর্শন। তাহলে কেন এই শিল্পীদের জন্য বিনা সুদে বা স্বল্প সুদের পুঁজি বরাদ্দ বা ব্যবস্থা করা হবে না? কেন সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের জন্য বাঁশ সরবরাহ নিশ্চিত করবে না?
দেশকে এগিয়ে নিতে নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে কর্মজীবী নারীদের আরও বেশি উৎসাহিত করতে হবে। আর প্রান্তিক মানুষদের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব? বিশেষ করে গ্রামীণ নারীদের আত্মনির্ভরশীলতা নিশ্চিত করা না গেলে নারীর ক্ষমতায়নও পরিপূর্ণভাবে করা সম্ভব নয়।
আমরা মনে করি, চাটাইশিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে এসব নারী কারিগরকে একটি সংগঠিত কাঠামোর আওতায় আনতে হবে। সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ, বিপণন ও পৃষ্ঠপোষকতার সুযোগ বাড়াতে হবে। স্থানীয় বাঁশ সংরক্ষণের জন্য বাগান তৈরি কিংবা সমবায়ভিত্তিক মডেল চালু করা যেতে পারে।
টিলাগাঁওয়ের চাটাই শুধু একটি পণ্য নয়, এটি সেখানকার নারীদের টিকে থাকার সংগ্রামের প্রতীক। তাঁদের প্রতি আর কোনো অবহেলা নয়। তাঁদের প্রতি বাড়িয়ে দেওয়া হোক সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতার হাত। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও লাভবান হবে, সামাজিকভাবে আসবে সমৃদ্ধি।