রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ও লবণের দাম কম থাকায় এবার আড়তে ভালো দাম পাওয়ার আশা ছিল মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের। দিনভর চামড়া সংগ্রহের পর তা নিয়ে আড়তে যান তারা। কিন্তু আড়তদাররা হতাশ করেছে তাদের। দেননি ন্যায্য দাম। হতাশা ও ক্ষোভে অনেকে তাই রাস্তার ওপরে ছুড়ে ফেলেছেন চামড়া। তবে আড়তদাররা দোষ চাপাচ্ছেন ট্যানারি মালিকদের ওপর। তারা বলছেন, ট্যানারি মালিকরা কম দাম দেওয়ায় বেশি দামে কিনতে পারছেন না চামড়া।

এমন দোষাদোষীর মধ্যেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন রাস্তায় পড়ে থাকা চামড়া ট্রাকে করে সড়ক থেকে তুলে নিয়ে গেছে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে এ বছর ৪ লাখ কোরবানি পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলেন আড়তদাররা।

শনিবার (৭ জুন) সকাল থেকে কোরবানির পর কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করতে শুরু করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। দুপুরের পর থেকে তারা সংগ্রহ চামড়া নিয়ে যান নগরীর আতুরার ডিপো এলাকার চামড়ার আড়তে। কিন্তু সেখানে ৭০০-৮০০ টাকা দিয়ে কেনা চামড়ার অর্ধেক দামও দেয়নি আড়তদাররা। চামড়া সংরক্ষণ করা কঠিন হওয়ায় অনেকে লোকসানে তা বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে। এতে করে ফের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

নগরীর আগ্রাবাদের চৌমুহনী এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অনেকে চামড়া সংগ্রহ করে জড়ো করে থাকেন। সন্ধ্যার পর তারা তা নিয়ে যান আড়তে। প্রতি বছর কোরবানির ঈদে তাই জমজমাট হয়ে উঠে এই এলাকা। গত কয়েক বছর এ চিত্রে কিছুটা ভাটা থাকলেও এবার দিনভর বেশ জমজমাট ছিল এই এলাকা। কিন্তু আজ রোববার থেকে সেখানে সুনসান নিরবতা। ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ সেখানে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেন।

মৌসুমি ব্যবসায়ী সেকান্দর হোসেন বলেন, ৭০০-৮০০ টাকায় কেনা চামড়াও আড়তদারেরা প্রতিটি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার বেশি দামে কিনতে চাইছেন না। তাদের কাছে জিন্মি হয়ে আছি আমরা। 

তবে দ্বিমত পোষণ করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো.

মুসলিম উদ্দিন বলেন, লবণযুক্ত চামড়ার দাম এক হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। লবণ ছাড়া চামড়া বেশি দামে কেনার সুযোগ নেই। এটা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অনেকে জানেন না।’

তিনি আরও বলেন, একটি ২০ ফুটের চামড়ায় প্রায় ৫০০ টাকা খরচ পড়ে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন খরচ, আড়তের খরচ সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া ট্যানারি মালিকেরা প্রতিটি চামড়ায় ২০ শতাংশ বাদ দিয়ে দেন। এতে করে আড়তদারেরাও খুব বেশি লাভ করতে পারেন না।

এ বছর কোরবানির পশুর লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম গত বছরের চেয়ে ৫ টাকা বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর ঢাকার বাইরের চামড়ার দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে খাসি ও বকরির চামড়ার দাম ২ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

আড়তদাররা জানান, ট্যানারিতে বিক্রির সময় ২০ শতাংশ বাদ দিয়ে প্রতি ফুটে ৫৫-৬০ টাকা পড়ে না। এছাড়া চামড়ার মানেও পার্থক্য থাকায় দামের হেরফের হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় আড়তদ র স গ রহ ক রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ