পটুয়াখালীতে স্বেচ্ছসেবক দলের নেতাসহ দুজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম
Published: 9th, June 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাসহ দুজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যকর্পূরকাঠী গ্রামের উত্তরকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন কালাইয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম ওরফে রেজভি (৩০) ও জিয়া সৈনিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন ওরফে সবুজ (৩৫)। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের স্বজন ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও দলীয় কার্যক্রম শেষ করে সাইফুল আলমসহ কয়েকজন মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা উত্তরকান্দা এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাইফুল আলম ও আল আমিনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় হালিম চৌধুরীর (৫০) নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হালিম চৌধুরী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এ কে এম ফারুক আহম্মেদ তালুকদারের অনুসারী।
হালিম চৌধুরী বলেন, তিনি বিএনপির কর্মী। সেই হিসেবে তিনি এলাকায় একটি ভাড়া ঘর নিয়ে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন। দুর্বৃত্তরা গতকাল রোববার রাতে সেই কার্যালয় ভাঙচুর করেছে এবং দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। তখন এলাকাবাসী তাঁদের প্রতিরোধ করেছে। আর ঘটনার সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে ছিলেন। তিনি হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক দল র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিটের রূপকথা লিখলেন আলকারাজ
মিউনিখে না হয় ট্রফি স্পর্শ করতে পারেননি ইয়ামালরা, স্পেন হারাতে পারেনি পতুর্গালকে। তবে কাছাকাছি সময়েই এক স্প্যানিশ রূপকথা লিখেছেন প্যারিসের টেনিস কোর্টে। ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে ইতালির ইয়ানিক সিনারকে ৪–৬, ৬–৭ (৪–৭), ৬–৪, ৭–৬ (৭–৩), ৭–৬ ( ১০–২) ব্যবধানে হারিয়ে যেন স্পেনেরই জয়োধ্বনি তুলে শিরোপা জিতে নিলেন কার্লোস আলকারাজ।
রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিট ধরে দুজনে লড়লেন শরীরের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে। কোর্টের পাশ বদলের বাড়তি সময় আর বিরতি যোগ করলে এই সময়টিতে ক্রিকেটে অন্তত দু-দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষ হয়ে যায়, সেই সময়টুকুতেই টেনিস কোর্টে যেন যুদ্ধে লড়লেন দু’জন।
ইতিহাস বলছে, টেনিসের উন্মুক্ত যুগে এত দীর্ঘতম সময় ধরে কোন ফাইনাল দেখেনি কেউ। তাই রোববারে সিনার আর আলকারাজের ম্যাচটি অনেকেই ‘ব্যাটেল অব ইয়াং জেনারেশন’ বলেও আখ্যায়িত করলেন। আলকারাজ যেন বারবার মনে করিয়ে দিলেন তার স্বদেশী লাল দুর্গের রাজা নাদালকে। যেখানে প্রায় একটি যুগ শাসন করে গেছেন নাদাল। কালতালিয় হলেও একটা অদ্ভুত মিল ছিল এদিন নাদাল আর আলকারাজের মধ্যে। নাদাল তার ক্যারিয়ারের পঞ্চমতম গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ২২ বছর ১ মাস ৩ দিনে। ঠিক একই বয়সে একই সময়ে আলকারাজও জিতলেন তার পঞ্চম গ্রান্ড স্ল্যামটি। পার্থক্য শুধু নাদাল জিতেছিলেন উম্বলন্ডন, আলকারাজ ফ্রেঞ্চ ওপেন।
আসলে টেনিসের ‘বিগ থ্রি’ রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জকোভিচের সময় শেষের পথে। প্রথম দু’জন অবসর নিয়েছেন, জকোভিচ এখনো র্যাকেট নিয়ে ছুটছেন কোর্টে। তবে তারই মধ্যে নতুন প্রজন্মের আগমন হয়েছে সিনার, আলকারাজদের হাত ধরে।
এদিন রোঁলা গারোয় তারুণ্যের সেই দীপ্ততায় মুগ্ধ হয়েছে টেনিসপ্রেমীরা। তেইশের সিনার কিম্বা বাইশের আলকারাজের ফাইনালটি ছিল ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী’র মতোই। প্রথম দুই সেট হেরে যাওয়ার পর ভেঙে না পড়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন আলকারাজ। ফিলিপে শঁতিয়ে কোর্টে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফাইনাল উপহার দিলেন।
চতুর্থ সেটে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের সামনে ছিলেন সিনার। একটি পয়েন্ট কাজে লাগাতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওই সেটটি জিতে নেন আলকারাজ। পঞ্চম সেটে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন সিনার, সুপার টাইব্রেকারেও নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু নূন্যতম রক্ষণ দেখাতে পারেননি তিনি।
টেনিসের ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত দীর্ঘতম ম্যাচ ১১ ঘণ্টা ৫ মিনিটের। ২০১০ সালের উম্বলন্ডনে যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনার আর ফ্রান্সের নিকোলাস মাহুতের ওই ম্যাচটি শেষ করতে তিন দিন সময় লেগেছিল। কিন্তু ফাইনালে সিনার আর আলকারাজ নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার লড়াইয়ের মাধ্যমে।
‘জানি না ম্যাচটি ঐতিহাসিক হয়ে থাকল কিনা, তবে এটা যদি ইতিহাস গড়ে থাকে তাহলে ভীষণ খুশি আমি।’ টানা দ্বিতীয়বার ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতার পর এটুকুতেই তৃপ্তি আলকারাজের।