ঢাকা উত্তরে বর্জ্য সরানোর কাজ ফেলে চালক-অপারেটররা ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে
Published: 9th, June 2025 GMT
ঈদের দিন গত শনিবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কাজের অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাজধানীর গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগরভবনে যখন ওই সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল, তখন মাঠপর্যায়ে পুরোদমে চলছিল বর্জ্য অপসারণের কাজ।
এমন সময় বর্জ্য অপসারণের কাজ ফেলে প্রশাসকের ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটির ভারী যানযন্ত্রের একজন অপারেটর ও বর্জ্য পরিবহনকারী বাহনের চারজন চালক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা ওই অপারেটর ও চালকেরা হচ্ছেন, ভারী যানযন্ত্র ১২ নম্বর পে-লোডারের অপারেটর আবুল হোসেন, বর্জ্য পরিবহনের বাহন কম্পেক্টর পরী-১০০৩–এর চালক মো.
এ নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির কর্মীদের মধ্যে সমালোচনা চলছে। কর্মীরা বলছেন, যে অপারেটর ও চালকেরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দেন। তাঁরা সেদিন বর্জ্য অপসারণের কাজে নিয়োজিত না থেকে ওই সংবাদ সম্মেলনে যান। এর ফলে কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
ঈদের দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগ শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করার দাবি করে। পরদিন গতকাল রোববার সকালে ঢাকা উত্তর সিটির বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে রাস্তার পাশে, এলাকার অলিগলিতে কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায়। একই পরিস্থিতি ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটির বেশ কিছু এলাকাতেও।
পরে সেদিন দুপুরে প্রথম আলোর অনলাইনে ‘রাতে শতভাগ বর্জ্য অপসারণের দাবি, সকালের ঢাকায় ভিন্ন চিত্র’ শিরোনামে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত বাহনগুলোর একাধিক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবুল হোসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের স্বঘোষিত সভাপতি পদে আসীন হন। তাঁর নামে ঢাকা উত্তর সিটির যান্ত্রিক বিভাগের ১২ নম্বর পে-লোডারটি বরাদ্দ করা রয়েছে। ভারী এ যানযন্ত্রের সাহায্যে মূলত কোনো এসটিএসে (অস্থায়ী বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র) কিংবা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করা বর্জ্য ডাম্প ট্রাকে তোলার কাজ করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের দিন নামাজ আদায়ের পরই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি গাবতলীর যান্ত্রিকের কার্যালয়ে উপস্থিত হন। পরে তাঁর দায়িত্বে থাকা ১২ নম্বর পে-লোডারটি নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বর্জ্য অপসারণকাজের জন্য নির্ধারিত স্থান মিরপুরের কালশী এলাকায় যান। সেদিন প্রায় রাত আড়াইটা পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণের কাজ করেন।
আরও পড়ুনবর্জ্য ল্যান্ডফিলে নেওয়ার আগেই গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে: উত্তর সিটি২০ ঘণ্টা আগেকাজের মধ্যে থেকেও সেদিন সন্ধ্যায় গুলশানে নগর ভবনে প্রশাসকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কাজে দৌড়াসি, বিশেষ কইরা আমার ভাই আছে আরেকজন সহকর্মী, উনারে দিয়া আমি ওইখানে (সংবাদ সম্মেলনে) গেছি।’ কোন সহকর্মীকে রেখে কাজে গেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সহকর্মীর নাম হইল, ইয়া, আমার ওই আরেহ লিটন, লিটন কইরা নাম। ওয় থাকে না, ওয় মাঝেমধ্যে আমি যদি কোথায় যাই, কোনো ইয়া থাকে, তাহলে হয়তো ও একটু সেফ দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেহেতু একটু পরিবহনের নেতা হিসেবে আছি, প্রতিটা জায়গায় আমরা দৌড়াইছি, যেন যেন গাড়ির জ্যাম, ক্লিয়ার করেছি, স্যারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি, আমার গাড়িও পরিচালনা করেছি।’
আমার এক ভাইকে কাজে দিয়ে আসছিলাম। তার নাম ফেরদৌস। সে করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের চালক। ঈদের দিন তার কোনো ডিউটি ছিল না।নূর হোসেন নিজাম, কম্পেক্টর পরী-১০০৬–এর চালকঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য পরিবহনের যানবাহনের মধ্যে রয়েছে ডাম্প ট্রাক, কম্পেক্টর ও কনটেইনার ক্যারিয়ার। এর মধ্যে সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে তিনটি কম্পেক্টর ও একটি কনটেইনার ক্যারিয়ারের চালকেরা ছিলেন। এঁদের একজন কম্পেক্টর পরী-১০০৬ নম্বরের (করপোরেশনের রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়িগুলোকে পরীক্ষাধীন বলে পরী দিয়ে নম্বর দেওয়া হয়) চালক নূর হোসেন নিজাম। ঈদের দিন তাঁর দায়িত্ব ছিল মগবাজার থেকে বর্জ্য আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে নিয়ে যাওয়া।
প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হলে নূর হোসেন নিজাম নিজের নাম নিজাম উদ্দীন বলে পরিচয় দেন। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে জানান, ঈদের দিন বেলা ১১টার দিকে তিনি কাজ শুরু করেছেন। কাজ করেছেন রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত। এ সময়ে তিনি ৭-৮টি বর্জ্যের ট্রিপ দিয়েছেন।
সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নূর হোসেন নিজাম জানান, ‘আমার এক ভাইকে কাজে দিয়ে আসছিলাম। তার নাম ফেরদৌস। সে করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের চালক। ঈদের দিন তার কোনো ডিউটি ছিল না।’ তবে তিনি নিজেই বেশির ভাগ কাজ করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
ঈদের দিন সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা অন্য চালকদের মধ্যে পরী-১০১০ নম্বর কম্পেক্টরের চালক ইসমাইল হোসেনের দায়িত্ব ছিল ফার্মগেট তেজকুনিপাড়ার খেলাঘর মাঠ এলাকায়। পরী-১০৩৪ নম্বর কনটেইনার ক্যারিয়ারের চালক হোসেন মন্টুর দায়িত্ব ছিল মিরপুরের জল্লাদ খানা ও ঈদগাহ মাঠ এলাকায়। ওই একই গাড়ি মন্টু ছাড়াও ইসরাফিল নামের আরেকজন চালক চালিয়ে থাকেন। গত জুলাইয়ে গাড়ি পুড়ে গেলে এ দুজন চালক দিনে ও রাতে করে ওই একটি গাড়িতে বর্জ্য পরিবহনের কাজ করেন। আর পরী-১০০৩ নম্বর কম্পেক্টরের চালক হারুন মিয়ার নিয়োজিত ছিলেন মিরপুরের টোলারবাগ ও কল্যাণপুর এলাকায়।
বর্জ্য অপসারণের কাজ ফেলে ওই অপারেটর ও চালকদের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা নিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, কাজ ফেলে কেন তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তা জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপস থ ত থ ক প রথম আল ঈদ র দ ন র বর জ য র র চ লক সহকর ম ক জ কর এল ক য় চ লক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা উত্তরে বর্জ্য সরানোর কাজ ফেলে চালক-অপারেটররা ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে
ঈদের দিন গত শনিবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কাজের অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাজধানীর গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগরভবনে যখন ওই সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল, তখন মাঠপর্যায়ে পুরোদমে চলছিল বর্জ্য অপসারণের কাজ।
এমন সময় বর্জ্য অপসারণের কাজ ফেলে প্রশাসকের ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটির ভারী যানযন্ত্রের একজন অপারেটর ও বর্জ্য পরিবহনকারী বাহনের চারজন চালক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা ওই অপারেটর ও চালকেরা হচ্ছেন, ভারী যানযন্ত্র ১২ নম্বর পে-লোডারের অপারেটর আবুল হোসেন, বর্জ্য পরিবহনের বাহন কম্পেক্টর পরী-১০০৩–এর চালক মো. হারুন, কম্পেক্টর পরী-১০১০–এর চালক ইসমাইল হোসেন, কম্পেক্টর পরী-১০০৬–এর চালক নূর হোসেন নিজাম এবং কনটেইনার ক্যারিয়ার পরী-১০৩৪–এর চালক হোসেন মন্টু।
সহকর্মীর নাম হইল, ইয়া, আমার ওই আরেহ লিটন, লিটন কইরা নাম। ওয় থাকে না, ওয় মাঝেমধ্যে আমি যদি কোথায় যাই, কোনো ইয়া থাকে, তাহলে হয়তো ও একটু সেফ দেয়।আবুল হোসেন, অপারেটরএ নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির কর্মীদের মধ্যে সমালোচনা চলছে। কর্মীরা বলছেন, যে অপারেটর ও চালকেরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দেন। তাঁরা সেদিন বর্জ্য অপসারণের কাজে নিয়োজিত না থেকে ওই সংবাদ সম্মেলনে যান। এর ফলে কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
ঈদের দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগ শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করার দাবি করে। পরদিন গতকাল রোববার সকালে ঢাকা উত্তর সিটির বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে রাস্তার পাশে, এলাকার অলিগলিতে কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায়। একই পরিস্থিতি ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটির বেশ কিছু এলাকাতেও।
পরে সেদিন দুপুরে প্রথম আলোর অনলাইনে ‘রাতে শতভাগ বর্জ্য অপসারণের দাবি, সকালের ঢাকায় ভিন্ন চিত্র’ শিরোনামে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত বাহনগুলোর একাধিক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবুল হোসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের স্বঘোষিত সভাপতি পদে আসীন হন। তাঁর নামে ঢাকা উত্তর সিটির যান্ত্রিক বিভাগের ১২ নম্বর পে-লোডারটি বরাদ্দ করা রয়েছে। ভারী এ যানযন্ত্রের সাহায্যে মূলত কোনো এসটিএসে (অস্থায়ী বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র) কিংবা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করা বর্জ্য ডাম্প ট্রাকে তোলার কাজ করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের দিন নামাজ আদায়ের পরই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি গাবতলীর যান্ত্রিকের কার্যালয়ে উপস্থিত হন। পরে তাঁর দায়িত্বে থাকা ১২ নম্বর পে-লোডারটি নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বর্জ্য অপসারণকাজের জন্য নির্ধারিত স্থান মিরপুরের কালশী এলাকায় যান। সেদিন প্রায় রাত আড়াইটা পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণের কাজ করেন।
আরও পড়ুনবর্জ্য ল্যান্ডফিলে নেওয়ার আগেই গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে: উত্তর সিটি২০ ঘণ্টা আগেকাজের মধ্যে থেকেও সেদিন সন্ধ্যায় গুলশানে নগর ভবনে প্রশাসকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কাজে দৌড়াসি, বিশেষ কইরা আমার ভাই আছে আরেকজন সহকর্মী, উনারে দিয়া আমি ওইখানে (সংবাদ সম্মেলনে) গেছি।’ কোন সহকর্মীকে রেখে কাজে গেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সহকর্মীর নাম হইল, ইয়া, আমার ওই আরেহ লিটন, লিটন কইরা নাম। ওয় থাকে না, ওয় মাঝেমধ্যে আমি যদি কোথায় যাই, কোনো ইয়া থাকে, তাহলে হয়তো ও একটু সেফ দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেহেতু একটু পরিবহনের নেতা হিসেবে আছি, প্রতিটা জায়গায় আমরা দৌড়াইছি, যেন যেন গাড়ির জ্যাম, ক্লিয়ার করেছি, স্যারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি, আমার গাড়িও পরিচালনা করেছি।’
আমার এক ভাইকে কাজে দিয়ে আসছিলাম। তার নাম ফেরদৌস। সে করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের চালক। ঈদের দিন তার কোনো ডিউটি ছিল না।নূর হোসেন নিজাম, কম্পেক্টর পরী-১০০৬–এর চালকঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য পরিবহনের যানবাহনের মধ্যে রয়েছে ডাম্প ট্রাক, কম্পেক্টর ও কনটেইনার ক্যারিয়ার। এর মধ্যে সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে তিনটি কম্পেক্টর ও একটি কনটেইনার ক্যারিয়ারের চালকেরা ছিলেন। এঁদের একজন কম্পেক্টর পরী-১০০৬ নম্বরের (করপোরেশনের রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়িগুলোকে পরীক্ষাধীন বলে পরী দিয়ে নম্বর দেওয়া হয়) চালক নূর হোসেন নিজাম। ঈদের দিন তাঁর দায়িত্ব ছিল মগবাজার থেকে বর্জ্য আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে নিয়ে যাওয়া।
প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হলে নূর হোসেন নিজাম নিজের নাম নিজাম উদ্দীন বলে পরিচয় দেন। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে জানান, ঈদের দিন বেলা ১১টার দিকে তিনি কাজ শুরু করেছেন। কাজ করেছেন রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত। এ সময়ে তিনি ৭-৮টি বর্জ্যের ট্রিপ দিয়েছেন।
সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নূর হোসেন নিজাম জানান, ‘আমার এক ভাইকে কাজে দিয়ে আসছিলাম। তার নাম ফেরদৌস। সে করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের চালক। ঈদের দিন তার কোনো ডিউটি ছিল না।’ তবে তিনি নিজেই বেশির ভাগ কাজ করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
ঈদের দিন সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা অন্য চালকদের মধ্যে পরী-১০১০ নম্বর কম্পেক্টরের চালক ইসমাইল হোসেনের দায়িত্ব ছিল ফার্মগেট তেজকুনিপাড়ার খেলাঘর মাঠ এলাকায়। পরী-১০৩৪ নম্বর কনটেইনার ক্যারিয়ারের চালক হোসেন মন্টুর দায়িত্ব ছিল মিরপুরের জল্লাদ খানা ও ঈদগাহ মাঠ এলাকায়। ওই একই গাড়ি মন্টু ছাড়াও ইসরাফিল নামের আরেকজন চালক চালিয়ে থাকেন। গত জুলাইয়ে গাড়ি পুড়ে গেলে এ দুজন চালক দিনে ও রাতে করে ওই একটি গাড়িতে বর্জ্য পরিবহনের কাজ করেন। আর পরী-১০০৩ নম্বর কম্পেক্টরের চালক হারুন মিয়ার নিয়োজিত ছিলেন মিরপুরের টোলারবাগ ও কল্যাণপুর এলাকায়।
বর্জ্য অপসারণের কাজ ফেলে ওই অপারেটর ও চালকদের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা নিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, কাজ ফেলে কেন তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তা জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।