শাশুড়ি ও দুই শ্যালককে হত্যার পর জানাজায় যুবক
Published: 10th, June 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে মা ও দুই ছেলে হত্যারহস্য উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই। শাশুড়ি ও দুই শ্যালককে একাই হত্যা করে এক যুবক। তাদের জানাজায়ও অংশ নেয় সে।
গত ২ জুন তিনজনের লাশ উদ্ধারের পর ৪ জুন রাতে রবিন হোসেন (২২) নামে যুবককে সন্দেহভাজন হিসেবে উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের মধুডাঙ্গা এলাকা থেকে আটক করা হয়। এর পর জিজ্ঞাসাবাদে রবিন তার শাশুড়ি নারগিস বেগম (৪০), দুই শ্যালক শামীম হোসেন (১৭) ও সোলায়মানকে (৬) একাই বালিশচাপা দিয়ে
হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ঢাকা জেলার সুপার কুদরত-ই-খুদা।
গ্রেপ্তার রবিন উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তাকে গত ৫ জুন আদালতে পাঠানো হলে শাশুড়ি ও দুই শ্যালককে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এর পর আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিহত নারগিস, শামীম ও সোলায়মান উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামের মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী ও দুই ছেলে।
জানা যায়, রাজা মিয়া ডেকোরেটরের ব্যবসা করতেন। বছরখানেক আগে তিনি মারা যান। আড়াই বছর আগে তাঁর মেয়ে নাসরিন আক্তারের সঙ্গে রবিনের বিয়ে হয়। রাজা মিয়া মারা যাওয়ার পর তাঁর ডেকোরেটরের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন রবিন ও তাঁর শাশুড়ি নারগিস। মাদকাসক্ত রবিন ব্যবসার অধিকাংশ টাকা ব্যয় করে ফেলে। এ কারণে আড়াই মাস আগে ডেকোরেটরের ব্যবসা ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন নারগিস। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের শুরু।
পিবিআই ঢাকা জেলার সুপার কুদরত-ই-খুদা জানান, এই কলহের জেরে রবিন গত ১ জুন রাতে নাসরিনকে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে ৬ কিলোমিটার দূরে শ্বশুরবাড়ি যায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রবিন প্রথমে টিনের বেড়া খুলে শামীমের ঘরে ঢুকে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে পাশের কক্ষে নারগিস ও সোলায়মানকেও বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। এর পর কৌশলে দরজা লাগিয়ে রাতেই নিজ বাড়িতে চলে যায় রবিন। পরদিন ২ জুন পুলিশ লাশ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ৩ জুন সন্ধ্যায় তিনজনের জানাজায় অংশ নেয় রবিন।
পিবিআই জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর নাসরিন, রবিনসহ কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়। ৪ জুন রবিনকে আটক করলে সে তিনজনকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে এ তিন খুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত
নারগিসের ভাই আব্দুর রশিদ অপমৃত্যু মামলা করেন। পরে রবিন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করলে থানায় হত্যা মামলা করা হয়। রবিন এখন জেল হাজতে রয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য স ব ক র কর ন রগ স হত য র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।