নরসিংদীর বেলাবো উপজেলায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার বেলাবো ইউনিয়নের মাটিয়ালপাড়া ও চরবেলাব গ্রামের মধ্যবর্তী সেতু এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল চরবেলাব গ্রামের মো.

জীবন মিয়ার ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে বেলাবো হোসেন আলী সরকারি কলেজ মাঠে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে চরবেলাব গ্রামের মোটরসাইকেল আরোহী ও বেলাব মাটিয়ালপাঁড়া গ্রামের অটোরিকাশচালকের মধ্যে সড়কে সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এ ঘটনায় দুই গ্রামের বেশ কয়েকজন যুবক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আহত হন চারজন। এ ঘটনার জেরে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেলাব মাটিয়ালপাঁড়া ও চরবেলাব গ্রামের শত শত মানুষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ১১ পুলিশ সদস্যসহ  দুই গ্রামের অন্তত ১৯ জন আহত হন। তাদের বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ নরসিংদী ও ভৈরবের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত সাইফুলের পরিবারের দাবি, পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে  সাইফুলে মৃত্যু হয়েছে।

বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি দুই গ্রামের মানুষই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এসময় উত্তেজিত গ্রামবাসী পুলিশের ওপরও
হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশও রাবার বুলেটে ছোড়ে। যিনি মারা গেছেন তিনি গ্রামবাসীর নাকি পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ চরব ল ব গ র ম র গ র মব স স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ