গুগলের পণ্য ব্যবস্থাপক রোনাল্ড হো একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘মোবাইলে অতিরিক্ত বা ঘন ঘন চার্জ দেওয়া খারাপ।’’ সাধারণত মোবাইল ফোনের ব্যাটারিতে চার্জ দেয়ার জন্য চার্জার পোর্ট থাকে যেখানে পিন প্রবেশ করানো হয়। যদি অপ্রয়োজনে ঘন ঘন চার্জ দেওয়া তাহলে ব্যাটারির ক্ষতির আগে চার্জিং পয়েন্ট নষ্ট হয়ে যায়।

বর্তমানে মোবাইল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাটারি ও চার্জিং অপ্টিমাইজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এই ডিভাইস ফোনের ব্যাটারির চার্জ যখন শতভাগ হয়ে গেলে অভ্যন্তরীণ ব্যাটারি চার্জার অতিরিক্ত চার্জ হওয়া ঠেকিয়ে দেয়। কারণ ফোনের ব্যাটারিগুলো চার্জারের কাছ থেকে শতভাগ চার্জ হওয়ার আগেই বার্তা পেয়ে যায়। 
কিন্তু অধিকাংশ স্মার্টফোন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান একটি বিষয়ে একমত যে- কোনো স্মার্টফোন ব্যবহার না করে যদি সংরক্ষণ করেন তাহলে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত চার্জ রাখা উচিত। এ থেকেই বোঝা যায়, স্মার্টফোনের ব্যাটারি শতভাগ চার্জ রাখতে পছন্দ করে না।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জ ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ থাকলে মোবাইল বেশি দিন টেকে। তাই স্মার্টফোনের চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে এ সীমার মধ্যে চার্জ রাখার জন্য বলে অধিকাংশ স্মার্টফোন নির্মাতা।

আরো পড়ুন:

জীবনে ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ কীভাবে বাড়াবেন

হজমশক্তি বাড়ানোর ৯ উপায়

অপরদিকে, DOD (Depth Of Discharge) ক্যাপাসিটির বাইরে চার্জ খরচ করলে মোবাইল ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনার মোবাইলের ব্যাটারির চার্জের পার্সেন্টেজ ২০% থেকে ৫০% এর মধ্যে থাকলেই চার্জে লাগিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন। একেবারে পাওয়ার অফ হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে যাবেন না। 

আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন: স্মার্টফোনের ব্যাটারির সবচেয়ে বড় শত্রু অতিরিক্ত তাপমাত্রা। বেশি তাপমাত্রায় স্মার্টফোনের ব্যাটারি কমতে শুরু করে। সেজন্য সরাসরি স্মার্টফোন রোদে রাখা ঠিক নয়। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গরমে ফোন বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। ৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার ওপরে গেলেই ব্যাটারির কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। 

মোবাইলের ব্যাটারী চার্জের নিরাপদ সীমা: নিজের ডিভাইসের সঙ্গে দেওয়া চার্জার ও কেবল ব্যবহারই সবচেয়ে নিরাপদ। মোবাইল ব্যাটারির সর্বোচ্চ ডিসচার্জিং ক্যাপাসিটি যা বেশিরভাগ মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে ৫০% এবং উন্নত মোবাইলে ক্ষেত্রে ৮০% থাকে। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ