ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ গ্রহণ করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডনে সেন্ট জেমস প্যালেসে অনুষ্ঠানে রাজা তৃতীয় চার্লস এ পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টার হাতে। বিশ্বব্যাপী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং পরিবেশ-প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কার গ্রহণের আগে ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। এ সময় তারা বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। খবর বাসস ও ইউএনবির।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা ও রাজা চার্লসের মধ্যে বৈঠকটি ছিল একেবারে ব্যক্তিগত। এতে বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে রাজা চার্লসকে অবহিত করেছেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে প্রায় আধ ঘণ্টার বৈঠক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। রাজা চার্লস বহু দিন ধরে প্রফেসর ইউনূসকে চেনেন। নানা বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এই পুরো সফরের মধ্যে আমি বলব, এটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।’

একান্ত সাক্ষাতের পর রাজা ও রানীর স্বাক্ষরযুক্ত একটি ছবি উপহার হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসকে  দেওয়া হয়। এটি প্রধান উপদেষ্টার জন্য বড় সম্মানের বিষয় বলে জানান প্রেস সচিব। বাকিংহাম প্যালেসে অধ্যাপক ইউনূসকে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের জন্য স্বাগত জানান রাজা চার্লস।
নিয়মিত কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সাক্ষাতের পাশাপাশি রাজা এমন ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ দেন, যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে বা ‘অডিয়েন্স’-এর মাধ্যমে রাজা কোনো ব্যক্তি ও তাঁর কাজের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক অধ্যাপক ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য আগাম অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। বর্তমানে লন্ডনে থাকা সারা কুক বলেছেন, তিনি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে সন্তুষ্ট। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, তাঁর (অধ্যাপক ইউনূস) বিস্তৃত বৈঠকের কর্মসূচি গণতন্ত্র, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু নিয়ে কাজ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন বিষয়ে তাদের অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি।

 

 

 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র চ র লস

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ