পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ১০টা থেকে পুরো উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারির বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছে। এ আদেশ রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গলাচিপা পৌর শহর ও আশপাশের এলাকায় সকল ধরনের সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য ও সকল প্রকার দেশীয় অস্ত্র নিষিদ্ধ থাকবে। একসঙ্গে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অবস্থান কিংবা চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১০টায় গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া গ্রামে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ ওঠে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এর আগে রাত ৮টার দিকে চর বিশ্বাস বাজারে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেছেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। কেউ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৪৪ ধ র উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণার মাঝে ১/১১ ষড়যন্ত্র থাকতে পারে: রাশেদ খান
আগামী বছরের এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণার মাঝে ১/১১ এর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, “নির্বাচন সংস্কার কমিশনের নতুন প্রস্তাবে রয়েছে, ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে ওইসব আসন ও কেন্দ্রে পুনরায় ভোট হবে। এপ্রিল মাস গরমের মাস। ওই সময় দেশের মানুষ ফসল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে স্বাভাবিকভাবেই ভোটার উপস্থিতি কম হবে। এভাবে ৪০ শতাংশের কম ভোট দেখাতে পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, দেশে ১/১১ নতুন করে অ্যাকটিভ করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশে নতুন করে ভিন্ন কৌশলে ১/১১ বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র চলছে।”
বুধবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে বলব, আপনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে নির্বাচন হতে হবে। কয়েকজন উপদেষ্টার কথামতো দেশ চালালে জনগণ মেনে নেবে না। রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই দেশ পরিচালনা করতে হবে।”
এপ্রিল মাসে নির্বাচনের সম্ভাব্যতা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তিনটি দল সংলাপে বলা হয়েছিল, তারা রমজানের আগে অথবা এপ্রিলে নির্বাচন চায়। কিন্তু বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অধিকাংশ দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধিকাংশ দলগুলোর মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে মাত্র তিনটি দলের আকাঙ্খা পূরণে এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছে।”
করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারা প্রসঙ্গে রাশেদ খান বলেন, “করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের কনসার্ন ম্যাটার। মানবিক করিডোরের নামে দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন হয় এমন কিছু জনগণ মেনে নেবে না। বুকের রক্ত দিয়ে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায় ঘটিয়েছে। প্রয়োজনে করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারাও জনগণ ঠেকাবে। ইজারার নামে বিদেশি কোনো এজেন্সির হাতে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর তুলে দেওয়া যাবে না। এই হটকারী সিদ্ধান্তগুলো দেশের মানুষ মানবে না।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নির্বাচন নিয়ে সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে উপদেষ্টারা আমলে না নিয়ে এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই অন্তর্বর্তী সরকারকে মনে রাখতে হবে, তারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে, জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। আমরা এই সরকারের সমালোচনা করেছি, উপদেষ্টাদের কাজের সমালোচনা করেছি। আমরা একটি বারের জন্যও প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি। কিন্তু দেশবাসী প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের নাটক দেখেছে।”
তিনি বলেন, “উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএসরা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। দুদক উপদেষ্টাদের এপিসদের নামে ফাইল খুলেছে। গণমাধ্যমে সবকিছুই এসেছে। আমরা মনেকরি, যে উপদেষ্টার পিএস, এপিএস দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে, সেই উপদেষ্টা দিয়ে দেশের কি সংস্কার হবে? তারা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা কীভাবে পূরণ করবে?”
সরকার শেখ পরিবারের কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, “আওয়ামী লীগের পলাতক সন্ত্রাসীরা প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের নিয়ে অপপ্রচার ও হুমকি-ধামিক দিচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগের এসব অপরাধী, শেখ পরিবারের সদস্য ও বিতর্কিত নির্বাচনে কথিত এমপিরা কীভাবে দেশ ছেড়ে পালালো? কারা তাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করল? এই সরকারকে সেই হিসেব দিতেই হবে। সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগের পলাতক এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদ পাহারা দিচ্ছে।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট নিজের আত্মীয় স্বজন সাথে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন দিল্লিতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। অডিও বার্তা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের উস্কানি দিচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার উস্কানির ফাঁদে পা দিলে আওয়ামী লীগের একটা নেতাকর্মীকেও দেশের জনগণ রেহায় দেবে না। হাসিনার পলায়নের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতিও পালিয়ে গেছে। গণহত্যাকারী হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেবে না জনগণ।”
মতবিনিময় সভায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি রাসেল আহমেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রিহান হোসেন রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সোহাগ/এস