ঈদে মুক্তি পাওয়া ছয় ছবির মধ্যে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন দর্শক। সিনেমাটি মুক্তির এক সপ্তাহ পরও টিকিট সংকট বিদ্যমান। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কেবল মাল্টিপ্লেক্সে আগামী তিন দিনের টিকিট সোল্ড আউট সিনেমাটির। এই পরিস্থিতিতে এবার তাণ্ডব বিদেশে মুক্তির খবর এলো। আজ থেকে ইউরোপ আমেরিকা ও কানাডার অর্ধশত সিনেমা হলে ধারাবাহিকভাবে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। দেশগুলোতে সিনেমাটির ওভারসিজ রিলিজের দায়িত্বে রয়েছে বায়োস্কোপ ফিল্মস।

 প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার রাজ হামিদ ও রুবনা রশীদ খান জানিয়েছেন ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় ছবিটি মুক্তির ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহে মোট ৬০টি সিনেমা হলে মুক্তির প্রস্তুতি চলছে। তারা বলেন, ‘শাকিব খানের ছবির ক্ষেত্রে সবসময়ই একটু বড় পরিসরেই ভাবতে হয়। কারণ, তাঁর ফ্যানবেজটা বিশাল। এবারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এবারের ছবিটি নিয়ে আমরা ভিন্ন স্ট্রাটেজি গ্রহণ করেছি। একই সঙ্গে আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপে মুক্তি দেব।’

এ ক্ষেত্রে নিউইয়র্কের কিউ গার্ডেন সিনেমাস ও শোকেস ফারমিংডেল এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের লেমলি নর্থ হলিউডসহ ভার্জিনিয়া, বোস্টন, সান ফ্রানসিসকো, শিকাগো এবং ডালাসের প্রেক্ষাগৃহে আগামী শুক্রবার ১৩ জুন মুক্তি পাবে। এ ছাড়াও রোম, স্টকহোম, কোপেনহেগেন এবং টরন্টোতে একই দিনে মুক্তি দেওয়া হবে ছবিটি। এই ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে পরবর্তী সময়ে অন্য শহরগুলোতে প্রদর্শিত হবে সিনেমাটি। বিদেশে বাংলা সিনেমার প্রসারে বহু বছর ধরেই কাজ করছে বায়োস্কোপ ফিল্মস। তাণ্ডব সিনেমার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ৫০তম পরিবেশনা পূর্ণ করতে যাচ্ছে। তাই বড় পরিসরেই ভিন্নভাবে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনেই সিনেমাটি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মুক্তির পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন রাজ হামিদ। 

এদিকে সুড়ঙ্গ ও তুফানের পর রায়হান রাফীর তাণ্ডব বিদেশি দর্শকদের কাছে দারুণ দর্শক টানবে বলে মনে করা হচ্ছে। ছবিটি নিয়ে রায়হান রাফী বলেন, ‘তাণ্ডব পয়সা উসুল সিনেমা। দেশের হলে হলে তাণ্ডবের অগ্রিম টিকিট সোল্ড আউট। সিনেমাটিতে একাধিক চমক রয়েছে; যা নিয়ে তেমন কিছুই বলতে চাই না। আশা করি, ছবিটি দর্শকরা হলে এসে দেখবেন এবং চমকগুলো উপভোগ করবেন।’

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, একটি টেলিভিশন চ্যানেলে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে সিনেমার গল্প। ছবির গল্প রচনায় রয়েছেন পরিচালক নিজেই এবং চিত্রনাট্য করেছেন আদনান আদিব খান ও রায়হান রাফী যৌথভাবে। সিনেমাটিতে শাকিব খানের সঙ্গে দেখা যাবে আফজাল হোসেন, জয়া আহসান, সাবিলা নূর, ফজলুর রহমান বাবু, সুমন আনোয়ার, সিয়াম আহমেদসহ একাধিক তারকাদের।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আমাদের যত ঘুঘু 

মনিরা হাঁসের (বৈকাল টিল) সন্ধানে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বটতলা ঘাট থেকে ছেড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আধঘণ্টায় সিমলা পার্কের উল্টো পাশের চরের কাছে আসতেই একটি ঘুঘুকে পাড়ে বসে থাকতে দেখলাম। দ্রুত একটি ছবি তুলে ওটির পরিচয় নিশ্চিত হলাম। এই দুল৴ভ পাখিটি প্রথম দেখি ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ কুয়াশাভরা সকালে হবিগঞ্জের কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে। এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি সুন্দরবনের করমজলে। 

পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর কাছ থেকে ভালো ছবি তোলার আশায় ধীরে ধীরে নৌকা পাখিটির কাছাকাছি নিতে থাকি। তবে নৌকা যতই কাছে যাক না কেন, সেটি কিন্তু অবিচল—একটুও নড়ছে না, চুপচাপ বসে আছে। কৌতূহলবশত নৌকা থেকে পাড়ে নামলাম, পাখিটির একদম কাছে চলে গেলাম। এরপর সেটি ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করল। আমরাও পিছু নিলাম। কিছুক্ষণ পর অনেকটা অনিচ্ছায় উড়াল দিল পাখিটি।

ঘুঘু পাখি কবুতরের মতো একই গোত্র কোলাম্বিডির (কপোত) সদস্য। ঘুঘুর দেহ কবুতরের মতোই তুলনামূলক ভারী, মাথা ছোট, চঞ্চু ও পা খাটো। ওড়ার পেশি শক্তিশালী। তাই দ্রুত ও দীর্ঘক্ষণ উড়তে সক্ষম। লেজ হাতপাখার মতো বিস্তৃত। তবে আকারে কবুতরের চেয়ে ছোট হয়। এরাও স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষ পিত্তথলিতে উৎপন্ন ক্ষীরের মতো অর্ধতরল দুধ খাইয়ে ছানাগুলোকে বড় করে তোলে, যা ‘পায়রা বা ঘুঘুর দুধ’ নামে পরিচিত। এদেশে এই গোত্রের যে ১৮টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১০টি কবুতর ও ৮টি ঘুঘু রয়েছে। প্রায় অর্ধেকের বেশি প্রজাতি সারা বছর প্রজনন করে। আয়ুষ্কাল চার থেকে ছয় বছর। এখানে এ পাখির সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো।

রামঘুঘু (ওরিয়েন্টাল টার্টল ডাব): ফিচারের শুরুতে লালচে বাদামি বর্ণের যে ঘুঘুর গল্প বললাম, সেটি এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি রাম, কইতর বা গোলাপ ঘুঘু। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বহু দেশে এর দেখা মেলে। প্রাপ্তবয়স্ক ঘুঘুর দেহের দৈর্ঘ্য ৩৩ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার। ওজন ১৬৫ থেকে ২৭৪ গ্রাম। 

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় উড়ন্ত ধবল ঘুঘু

সম্পর্কিত নিবন্ধ