বিভেদ ভুলে সিলেট নগর বিএনপির নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা
Published: 13th, June 2025 GMT
দ্বন্দ্ব-বিভেদ ভুলে সিলেটে মহানগর বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করতে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি দুই নেতার বাগ্বিতণ্ডা এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে প্রকাশ্যে চলে আসা বিভেদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সমাধানে কেন্দ্রীয় নেতারা এমন নির্দেশনা দেন।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নগরের দরগাগেট এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় বিবাদে জড়ানো নেতাদের সঙ্গে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে গত ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট মহানগর বিএনপি আলোচনা সভার আয়োজন করে। সেখানে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সামনেই বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। ওই সভায় দুজন জ্যেষ্ঠ নেতা উপস্থিত থাকলেও তাঁরা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি। এ ঘটনা দলের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ ছাড়া গত ২০ মে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মতবিনিময় সভা হয়। সভা চলাকালে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর মুঠোফোনে আওয়ামী লীগদলীয় সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ‘কল’ আসে—এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ইমদাদ হোসেন ওই রাতেই জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনায় মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও তাঁর অনুসারীদের অভিযুক্ত করেন।
ইমদাদের অভিযোগের পরই ফেসবুকে দুই পক্ষের অনুসারীরা পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস দেওয়ার পাশাপাশি একে অন্যকে দোষারোপ করতে থাকেন।
দলীয় সূত্র জানায়, পৃথক দুটি ঘটনায় সমালোচনা তৈরি হলে কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘটনা তদন্তে ও সমাধানে দুটো পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। আলোচনা সভায় দুই নেতার বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন। এ ছাড়া কল–কাণ্ডের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীকে একমাত্র সদস্য করে কমিটি করা হয়। এ দুটি কমিটি একত্র হয়ে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতাদের নিয়ে আজ বৈঠক করে।
বৈঠকে এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী ছাড়াও সিলেট বিভাগের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সৃষ্ট ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও ইমদাদ হোসেন চৌধুরী এবং জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্যের সুযোগ না পাওয়া সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুটি ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার স্বার্থে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দুই নেতাকে সব বিভেদ ও দ্বন্দ্ব ভুলে একত্রে কাজ করার জন্যও বলা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি সৃষ্ট দুটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সব নেতাকেই ভবিষ্যতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় রাখার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।
যোগাযোগ করলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সম্প্রতি যে দুটি ঘটনা ঘটেছে, এর সমাধান হয়েছে। পারস্পরিক ভুল–বোঝাবুঝি মিটিয়ে আগামী দিনে সবাইকে দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব, বৈঠকে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপস থ ত গঠন ক ঘটন য় ইমদ দ
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে পরিবহনের জরিমানা
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে যাত্রীদের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগে চার যাত্রীবাহী বাসকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গোল চত্বর বাসস্ট্যান্ডে এ অভিযান চালায় যৌথবাহিনী।
কাশিয়ানী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুনমুন পাল জানান, ঈদে রাজধানীতে ফেরা মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত বাস ভারা আদায় করছিল পরিবহগুলো। এসময় যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। পরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে নড়াইল এক্সপ্রেসের দুটি বাস, নড়াইল স্টার এক্সপ্রেস এবং আনন্দ পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুনমুন পাল।
পরে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা/বাদল/এস