অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর দেশের রাজনীতিতে বিদ্যমান উত্তেজনা কেটে যাবে, অনিশ্চয়তা দূর হবে এবং বৃহত্তর ঐকমত্য তৈরি হবে বলে আশা করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে দুজনের বৈঠকের পরে দেওয়া যৌথ বিবৃতির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে দলটি।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান দলের এ অবস্থান তুলে ধরেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা কাজ করছিল। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দল ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করায় রাজনীতিতে একধরনের চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়।

ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, ‘লন্ডনের বৈঠকে তারেক রহমান ডিসেম্বর থেকে সরে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টাও শর্তসাপেক্ষে তা বিবেচনার কথা বলেছেন। নিজস্ব অবস্থানকে যৌক্তিক কারণে পুনর্বিবেচনা করার এ ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। উভয় নেতাকে এ জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘সংস্কার, বিচার ও জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে নীতিগত সমর্থন পাওয়া গেছে আজকের বৈঠক থেকে। এটা স্বৈরতন্ত্রমুক্ত আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণের পথকে মসৃণ করবে।’

তবে বৈঠকের পরে দেওয়া যৌথ বিবৃতির বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। তারেক রহমান একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান মাথায় রেখেও এ কথা সত্য যে তারেক রহমান দেশের রাজনীতির একক প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাঁদের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ হলেও আক্ষরিক অর্থে এটা দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে একজন রাজনৈতিক নেতার সংলাপ। এই সংলাপের পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের বারবার “যৌথ বিবৃতি” বলা বিস্ময়কর। একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতি প্রদান শোভনীয় নয়। একই সঙ্গে এককভাবে বিএনপির মতামতের ভিত্তিতে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়াও শোভনীয় নয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ শ র র জন ত ত র ক রহম ন র জন ত ক র জন ত ত ব এনপ র উপদ ষ ট সরক র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।

২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।

ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • ট্রাম্প কি রাজার শাসন চালাচ্ছেন