চেনা রূপে বরিশাল নদীবন্দর, ঈদফেরত যাত্রীদের ভিড়
Published: 13th, June 2025 GMT
ঈদের পর কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপে বরিশাল নদীবন্দরে সেই চিরচেনা রূপ ফিরে পেয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর থেকেই বরিশাল নদীবন্দরে যাত্রীদের ঢল নামে। কে কার আগে এসে লঞ্চে জায়গা নেবেন, এ নিয়ে শুরু হয় জোর তৎপরতা। শুক্রবার বরিশাল নদীবন্দর থেকে সরাসরি ১২টি লঞ্চ ছেড়ে যায়। এ ছাড়া ভায়া পথে আরেকটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
বিকেলে বরিশাল নদীবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল পরিসরের পন্টুনে যাত্রীদের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাই নেই। ঘাটে ১২টি লঞ্চ নোঙর করা। লঞ্চগুলোর নিচতলা, দোতলা, তিনতলা এমনকি ছাদের ডেকে বিছানার চাদর বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন অসংখ্য যাত্রী।
আরিফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজ যে অবস্থা তাতে লঞ্চে জায়গা পাব বলে মনে হচ্ছিল না। তাই দুপুরের মধ্যে ঘাটে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি, তখনই সব লঞ্চের ডেক প্রায় পরিপূর্ণ। ভাগ্য ভালো যে একটু জায়গা পেয়েছি। কিছু পরে এলে হয়তো তা-ও পেতাম না।’
ঈদ উপলক্ষে এবার ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়েছিল ৩ জুন রাত থেকে। লঞ্চমালিকদের সূত্র বলছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ সার্ভিসের জন্য তাঁরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। এর অংশ হিসেবে এ সার্ভিসে যুক্ত করা হয় অন্তত ১৬টি লঞ্চ। ঈদের এ বিশেষ যাত্রা চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত।
সূত্র জানায়, এবার ঈদের দীর্ঘ ছুটি হওয়ায় প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী গ্রামে ফেরেন। ঈদের পর দুই দিন যাত্রীদের তেমন ভিড় ছিল না। এ সময় চার থেকে ছয়টি লঞ্চ চলাচল করেছে, কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার বন্দর থেকে ১১টি লঞ্চ সরাসরি ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করেছে। আজ যাত্রীদের চাপ আরও বেড়ে গেলে লঞ্চের সংখ্যা বাড়িয়ে ১২টি করা হয়।
অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর নদীপথে যাত্রী সংখ্যা তলানিতে নামে। এ জন্য প্রতিদিন চার থেকে ছয়টি লঞ্চের বদলে দুটিতে নামিয়ে এনে রোটেশন প্রথা চালু করা হয়। তবে ঈদের যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায় বলে অতিরিক্ত লঞ্চ দিয়ে বিশেষ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
তবে ঈদযাত্রায় ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজারের জায়গায় এখন ১ হাজার ২০০ টাকা, ডাবল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকার স্থলে ২ হাজার ২০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া ৩০০ টাকার জায়গায় ৪০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হলেও কেবিনের টিকিট মিলছে না। লঞ্চে গেলে কেবিন নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হলেও কালোবাজারে সিঙ্গেল কেবিন তিন হাজার এবং ডাবল কেবিন ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাকিবুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, শুক্রবার ঢাকায় যাওয়ার জন্য তিনি কোনো লঞ্চের কেবিন পাননি। কিন্তু কালোবাজারে তাঁর কাছে একটি সিঙ্গেল কেবিন তিন হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। দুই হাজার টাকা দেওয়ার কথা বললেও তা পাননি।
জানতে চাইলে সুরভী শিপিং লাইনসের পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আমরা সরকার-নির্ধারিত ভাড়ার কম নিয়েই যাত্রী পরিবহন করি। এতে অনেক সময় আমাদের লোকসানে থাকতে হয়। কিন্তু ঈদের সময় সরকার-নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে তা কিছুটা পোষাতে হয়।’ কালোবাজারে টিকিট বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে মালিক বা লঞ্চের স্টাফদের সংশ্লিষ্টতা নেই। হয়তো বাইরের কেউ আগে নিজেদের নামে বুকিং দিয়ে এসব করতে পারে। বাইরের কেউ এমন করলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, দেশে নৌপথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি যাত্রী চলাচল করে ঢাকা-বরিশাল পথে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এই নৌপথে যাত্রীসংখ্যা কমে যায়। আগে যেখানে প্রতিদিন ছয় থেকে আটটি লঞ্চ চলাচল করত, এখন প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলাচল করে। তবে ঈদের সময় যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে বরাবরই। এবার তা অনেক বেশি।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী গ্রামে ফিরেছেন। তাই এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া পাচ্ছে লঞ্চগুলোয়। বিশেষ করে ঈদের তিন দিন আগে এবং ঈদের দুই দিন পর থেকে যাত্রীদের এত চাপ যে তাঁদের দম ফেলার সময় নেই।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারে এলে ৫০ লাখ নারীকে ফ্যামিলি কার্ড দিবে বিএনপি : সজল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় যুবদলের নির্দেশনা অনুযায়ী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করছি।
আমাদের দলে যে সিদ্ধান্ত সবাইকে মানবিক কর্মকান্ডে থাকতে হবে সেই সিদ্ধান্তর মোতাবেকি কিন্তু আমরা মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। যুবদলের নেতাকর্মীরা সবসময় মানুষের সেবায় তাদের পাশে থাকতে চায়। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো মানুষের কল্যাণেই আগামী দিনে কাজ করবে।
যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা যুবদলের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকাল দশটায় শহরের ১৩নং ওয়ার্ডস্থ গলাচিপা রুপার বাড়ি মোড়ে দিনব্যাপী মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন কমলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ৩১ দফার আলোতে আগামীতে যে দেশ পরিচালনা করার যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে আগামী দিনের যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে প্রথমেই ৫০ লাখ নারীদের জন্য ফ্যামিলি কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।
যে পরিবারের প্রধান তার নামেই সে ফ্যামিলি কার্ড হবে এবং নারীরা রাষ্ট্রের সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
সকল পণ্যের উপরে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভর্তুকি দিয়ে সকলের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করবে। ইনশাল্লাহ যদি বিএনপি ক্ষমতা আসে তাহলে এর সুফল আপনারা পাবেন। শুধু তাই না হেল্প কার্ডেরও ব্যবস্থা করা হবে। বিনামূল্যে মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া হবে । যাতে করে এদেশের মানুষ হাসপাতালে গেলে তাদের সঠিক চিকিৎসাটি পায়।
এই হেল্প কার্ডের মাধ্যমে সকলের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। সুতরাং আপনারা সবাই আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা যে অসুস্থ তার জন্য দোয়া করবেন দোয়া করবেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের জন্য দোয়া করবেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, যুগ্ম, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সজিব, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ,ওয়াদুদ ভূইয়া সাগর, মোঃ আরমান হোসেন, সাইফুল ইসলাম আপন, আশিকুর রহমান অনি, বাদশা খান, শাহীন শরীফ, ফয়েজ উল্লাহ সজল, ফয়সাল আহমেদ, আরিফ খান, হাবিবুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।