রাজনৈতিক বিতর্ক যে সাম্প্রতিক সময়ে নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাভাবিক কাজকর্ম ও গতিকে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বাধাগ্রস্ত করছিল, তা সবার জন্যই একটা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে দীর্ঘ নির্বাসনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাতের উদ্যোগে তাই স্বাভাবিকভাবেই সবার কৌতূহল ও আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। বৈঠকের আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ও বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যেও প্রকাশ পায় যে উভয় দিক থেকেই এ বৈঠকের তাগিদ অনুভূত হয়েছে। বৈঠকের পর উভয় তরফেই আলোচনার ফলাফলে যে ‘সন্তুষ্টি’ প্রকাশ করা হয়েছে, তা সবার জন্যই স্বস্তিদায়ক।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই স্বস্তি স্থায়ী হবে কি না? সংকটের গভীরতা বা উভয় পক্ষের মধ্যে দূরত্ব কতটা প্রকট ছিল, তার ওপরেও কিন্তু স্বস্তির স্থায়িত্ব কিছুটা নির্ভর করে। সাধারণভাবে যে ধারণা তৈরি হচ্ছিল, তা হলো বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা বা সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অবশ্য এ সন্দেহ দলটির নেতৃত্বের মধ্যে যতটা না দেখা যাচ্ছিল, তার চেয়ে বেশি প্রকট ছিল মাঠ দখলের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়া ধৈর্যহারা লোকজনের এবং ষড়যন্ত্রতত্ত্বের প্রবক্তাদের কথাবার্তায়। অন্তব৴র্তী সরকারের সমর্থকদেরও একটি অংশ সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়, ইউনূস সরকারকে ৫ থেকে ১০ বছর সুযোগ দেওয়ার পক্ষে যে প্রচার শুরু করে, তা–ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অবিশ্বাস তৈরির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রমজান যেহেতু মধ্য ফেব্রুয়ারির পরপরই শুরু, সেহেতু নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো আপত্তি নেই।প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে করমর্দন করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল লন্ডনের হোটেল ডরচেস্টারে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ব এনপ র স বস ত ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ