ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক ষড়যন্ত্রকারীদের কফিনে শেষ পেরেক: প্রেস সচিব
Published: 14th, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার ঐতিহাসিক বৈঠকটি ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য কফিনে শেষ পেরেক।
শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শফিকুল আলম লেখেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি ছিল ঐতিহাসিক। এটি ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য গেম ওভার মুহূর্ত (কফিনে শেষ পেরেক)।
প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের অর্জন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, অধ্যাপক ইউনূস ব্রিটিশ রাজা চার্লসের কাছ থেকে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গ্রহণ এবং ব্রিটিশ রাজার সঙ্গে একান্তে ৩০ মিনিটের বৈঠক করেছেন। তিনি দাবি করেন, এটি জুলাই বিপ্লব ও গত বছরের জুলাই থেকে বাংলাদেশে সংঘটিত যুগান্তকারী পরিবর্তনের একটি স্বীকৃতি।
শফিকুল আলম বলেন, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শীর্ষ একজন সহযোগীর ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ৩২০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, এনসিএ কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘এটি সংস্থাটির সম্পত্তি জব্দের একক বৃহত্তম ঘটনা।’
‘এটি সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদদের জন্য একটি বার্তা। এটি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক,’ লেখেন তিনি ।
শফিকুল আলম বলেন, ব্রিটিশ মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানসহ বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে, যা সম্পদ পুনরুদ্ধারে গভীরতর সম্পৃক্ততার পথ তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, ‘আশা করি, আমরা এই অভিজ্ঞতা বিশ্বব্যাপী কাজে লাগাতে পারবো।’ প্রেস সচিব আরও বলেন, এই সফরে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রেও আশার সঞ্চার হয়েছে।
সূত্র: বাসস
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন কর মকর ত ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।