ঈদে শাকিব খানের সিনেমা মানেই প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের ঢল। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তাণ্ডব’ ঈদুল আজহার সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা। মুক্তির পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে বেশ ভালোই যাচ্ছিল। এরই মধ্যে পাইরেসির ফাঁদে পড়েছে সিনেমাটি।

প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার ছোট ছোট ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। শুরুতে অনেকে এটিকে প্রচারের অংশ ভাবলেও পরে পুরো সিনেমাটিই অনলাইনে ফাঁস হয়ে যায়— যা নির্মাতা ও প্রযোজকের জন্য বড় ধরনের ব্যবসায়ীক ধাক্কা।

‘তাণ্ডব’-এর প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল আগেই সম্ভাব্য পাইরেসির বিষয়ে সতর্কতাবার্তা দিয়েছিলেন। গত ৮ জুন সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাইরেসি রোধে আমরা কোনো ছাড় দেব না। কেউ হলে বসে ভিডিও করলে বা তা ছড়ালে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের টিম সোশ্যাল মিডিয়া ও হলগুলো মনিটর করছে।”

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে শাকিবের ‘তাণ্ডব’ নেই আশানুরূপ দর্শক

প্রকাশ্যে ‘তাণ্ডব’ এর রোমান্টিক গান, শাকিব-সাবিলার রোমান্স জমে ক্ষীর

হুঁশিয়ারি দিয়ে শাহরিয়ার শাকিল বলেন, “যেসব সিঙ্গেল স্ক্রিনে সিনেমাটি চলেছে, সেগুলোতে নজরদারি রয়েছে। পাইরেসি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহি করতে হবে।”

গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায় শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। এটিও অনলাইনে ফাঁস হয়েছিল। তখন প্রযোজক শাহরিন আক্তার দাবি করেছিলেন, পাইরেসির কারণে তাদের প্রায় চার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো একই ধরনের ঘটনা ঘটল।

পাইরেসির ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে শাকিব খান বলেন, “এই ধরনের কাজ দর্শকের আগ্রহ ও প্রযোজকদের সাহস নষ্ট করে দেয়। সিনেমা বানানো একটি কঠিন কাজ, এর এমন পরিণতি খুবই দুঃখজনক।”

রায়হান রাফি পরিচালিত ‘তাণ্ডব’-এ শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর। তাছাড়াও রয়েছেন জয়া আহসান, আফজাল হোসেন, শহিদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, গাজী রাকায়েতসহ দেশের প্রথম সারির শিল্পীরা।

সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড, চরকি এবং দীপ্ত টিভি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত রয়েছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ