ইরানে ইন্টারনেট বন্ধ, স্টারলিংক চালু করলেন ইলন মাস্ক
Published: 15th, June 2025 GMT
মার্কিন ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, ইরান সরকারের পক্ষ থেকে স্থলভিত্তিক ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর তিনি উপগ্রহনির্ভর ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক সেখানে চালু করেছেন।
শনিবার সকালে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে মাস্ক লিখেন, “The beams are on,” অর্থাৎ “সংযোগ চালু হয়েছে।”
ইরান সরকার শুক্রবার সকালে দেশের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় দেশটির সাধারণ মানুষ আন্তর্জাতিক সংবাদ ও তথ্যের উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় স্টারলিংকের মাধ্যমে বিকল্প ইন্টারনেট সংযোগ চালু করেন ইলন মাস্ক।
তার আগে ইসরায়েল দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় এবং শীর্ষস্থানীয় সরকারপন্থি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। এই হামলার ফলে ইরানে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সরকারি সূত্রের বরাতে ওয়াশিংটন টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই হামলা ইরানের শাসকের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভাব্য আন্দোলন দমন করতেই ইরান সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
শুক্রবারই মার্কিন রক্ষণশীল টকশো সঞ্চালক মার্ক লেভিন এক পোস্টে ইলন মাস্ককে বলেন, তিনি যেন স্টারলিংকের মাধ্যমে ইরানিদের পুনরায় ইন্টারনেট সংযোগ দেন। মার্ক লেভিন মাস্ককে বলেন, স্টারলিংক চালু করা হলে তা ইরানি শাসনের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেবে। এরপরই ইলন মাস্ক জানান, স্টারলিংক চালু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্টারলিংক হচ্ছে স্পেসএক্সের মালিকানাধীন একটি উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা, যা পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে থাকা হাজার হাজার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দূরবর্তী বা সংযোগবিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে ইন্টারনেট সরবরাহ করে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন টাইমস
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য ল ইলন ম স ক ইলন ম স ক ট ইমস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল
ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র
গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।
গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানেরইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।
ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।
ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।