আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকের কাছে আবারও ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 16th, June 2025 GMT
রাজধানীর শিশু একাডেমি-সংলগ্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকের কাছে আজ সোমবার সকালে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
ককটেল বিস্ফোরণের এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর। তিনি বলেন, আজ ভোর ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে ট্রাইব্যুনালের সামনে পাকা রাস্তার ওপর বিস্ফোরণ হয়েছে। আজকে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। আরেকটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
খালিদ মনসুর বলেন, আজকের বিস্ফোরণের ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে এখন পর্যন্ত এর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার আজ শুনানি হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। তাঁর সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও এই মামলার আসামি। এই মামলার শুনানি আজ দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমন একটি মামলার শুনানির হওয়ার আগে সকালবেলা ট্রাইব্যুনালের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও মামুনের বিরুদ্ধে হওয়া এই মামলার এর আগে শুনানি হয়েছিল ১ জুন। সে দিনও একই জায়গায় (শিশু একাডেমিসংলগ্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকের সামনে) ‘ককটেলসদৃশ পটকা’ বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছিল শাহবাগ থানা-পুলিশ।
সেই ঘটনা সম্পর্কে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, এর আগের বিস্ফোরণের ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। সে ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলমান আছে।
বিস্ফোরণ নিয়ে চিফ প্রসিকিউটর যা বললেন
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হয় এই মামলার শুনানি শেষে আজ দুপুরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার মামলার শুনানির দিন ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনা বিচার বাধাগ্রস্ত করার কোনো চেষ্টা কি না?
জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এগুলো আমলে নিচ্ছি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এগুলো ডিল করবে। বাংলাদেশের যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তার বিচারপ্রক্রিয়া স্মুথলি অগ্রসর হতে থাকবে। আর কেউ যদি এটাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে, কেউ যদি আইন অমান্যকারী কোনো কাজ করে, সে ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ককট ল ব স ফ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫